আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
সামাজিক বিজ্ঞান

সামাজিক অধিকার

যেসব অধিকার সমাজে নাগরিকদের সভ্য ও উন্নত জীবনযাপনে সাহায্য করে এবং যেসব অধিকার জীবন রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য সে-সব অধিকারকে সামাজিক অধিকার বলে। এসব অধিকার ব্যক্তির মানবিক গুণ বিকাশে সাহায্য করে। এগুলাে ব্যতীত মানুষের পক্ষে উন্নত সামাজিক জীবনযাপন সম্ভব নয়। নিচে প্রধান প্রধান সামাজিক অধিকার নিয়ে আলােচনা করা হল।

১. জীবন রক্ষার অধিকার : জীবনের নিরাপত্তার অধিকারই হচ্ছে জীবন রক্ষার অধিকার। জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে অন্য সব অধিকারই অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

২. সম্পত্তির অধিকার : সম্পত্তির অধিকার বলতে সম্পত্তি অর্জন করা, সম্পত্তি ভােগ করা ও হস্তান্তর করার সুযােগ সুবিধা বুঝায়। এই অধিকারের অর্থ হচ্ছে- একজনের সম্পত্তি অন্যে জবরদখল বা লুট করতে পারবে না। সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

৩. চলাফেরার অধিকার : সকল নাগরিকের রাষ্ট্রের সর্বত্র অবাধে চলাফেরার অধিকার আছে। এটা মৌলিক অধিকার। তবে যদি ব্যক্তির অবাধ চলাফেরা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতির কারণ হয় তবে রাষ্ট্র সে অধিকার ক্ষুন্ন করতে পারে।

৪. মত প্রকাশের অধিকার : এটি হচ্ছে নাগরিকদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। এ অধিকার ব্যতীত গণতন্ত্র কার্যকরী হতে পারে না। তবে মতামত রাষ্ট্রবিরােধী বা ধ্বংসাত্মক হলে রাষ্ট্র সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মতামত যুক্তিসঙ্গত, গঠনমূলক ও জনকল্যাণমূলক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

৫. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা : এ হচ্ছে সংবাদপত্রে বা বইপুস্তকে স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করার অধিকার। সংবাদপত্রে সরকারের কাজকর্মের ও সরকারি নীতির সমালােচনা করা হয়। সরকারি ও বিরােধী দলের বক্তব্য সংবাদপত্রে থাকে। এগুলাে জনমত গঠনের জন্য প্রয়ােজনীয়। রাষ্ট্রবিরােধী অশ্লীল মতামত প্রকাশ এ অধিকারের অন্তর্গত নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটি খুব প্রয়ােজনীয় অধিকার।

৬. সভাসমিতির অধিকার : রাষ্ট্র নাগরিকের বিভিন্ন বিষয়ে সভাসমিতি করার অধিকার স্বীকার করে। কিন্তু সভা, সমিতি, সংঘ যদি সৃজনধর্মী ও মহৎ উদ্দেশ্যে না হয়ে রাষ্ট্রবিরােধী বা বেআইনী কাজের উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে রাষ্ট্র সে সমত তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

৭. চুক্তি করার অধিকার : ব্যবসা-বাণিজ্য, সম্পত্তির হস্তান্তর ও অন্য যেকোনাে বিষয়ে নাগরিকের চুক্তি করার অধিকার আছে। চুক্তির শর্ত সংরক্ষণে রাষ্ট্র নাগরিককে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু রাষ্ট্র বা জনকল্যাণবিরােধী কোনাে চুক্তি করা যাবে না।

৮. পরিবার গঠনের অধিকার : এ অধিকার সভ্য সমাজ জীবনের জন্য একান্ত প্রয়ােজনীয়। পরিবারকে কেন্দ্র করেই সমাজ জীবন গড়ে ওঠে। বিয়ে করার, সন্তান-সন্ততি লাভ ও তাদের লালন পালনের অধিকার এবং উত্তরাধিকার এ অধিকারের অন্তর্গত।

৯. ধর্মের অধিকার : এ অধিকারের ফলে নাগরিকগণ নিজেদের ইচ্ছেমতাে ধর্ম গ্রহণ, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন ও ধর্ম প্রচার করতে পারে। অন্য কেউ তাতে বাধা দিতে পারে না।

১০. কর্মের অধিকার : নাগরিক তার যােগ্যতা অনুযায়ী যেকোনাে আইনসঙ্গত পেশা গ্রহণ করতে পারে।

১১. আইনের চোখে সমানাধিকার : এই অধিকারের অর্থ হচ্ছে আইন সকলের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযােজ্য। ধনী-গরিব, সবল-দুর্বল সকলকে রাষ্ট্রের আইন মেনে চলতে হবে। অপরাধ করলে সবাইকে শাস্তি ভােগ করতে হবে।

১২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষা লাভের অধিকার : জীবন বিকাশের জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষা একান্ত প্রয়ােজনীয়। চিকিৎসা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পুষ্টি ও নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবস্থা করে রাষ্ট্রকে জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তা দিতে হয়। শিক্ষা উপযুক্ত ও সচেতন নাগরিক গড়ে তােলে। প্রত্যেক নাগরিকের শিক্ষার অধিকার আছে। সকলকে লেখাপড়ার সুযােগ সুবিধা দেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য।

১৩. সংস্কৃতি ও ভাষার অধিকার : নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভাষার স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের আছে। সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের নাগরিকের নিজস্ব স্বাতন্ত্র ও স্বকীয়তা রক্ষা করার জন্য এ অধিকার অপরিহার্য।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button