আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা

রােমান সভ্যতা | সভ্যতায় রােমের অবদান | রোমান আইনের ইতিহাস

রােমান সভ্যতা

পটভূমি : গ্রিসের সভ্যতার অবসানের আগেই ইতালিতে টাইবার নদীর তীরে একটি বিশাল সম্রাজ্য ও সভ্যতা গড়ে ওঠে। রােমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই সভ্যতা রােমান সভ্যতা নামে পরিচিত। প্রথম দিকে রােম একজন রাজার শাসনাধীন ছিল। এ সময় একটি সভা ও সিনেট ছিল। রাজা স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ৫১০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ রােমে একটি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। রােমান সভ্যতা প্রায় ছয়শ’ বছর স্থায়ী হয়েছিল।

ভৌগােলিক অবস্থান ও সময়কাল :

ইতালির মাঝামাঝি পশ্চিমাংশে রােম নগর অবস্থিত। ইতালির দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর থেকে উত্তর দিকে আল্পস পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত। ইতালি ও যুগােস্লাভিয়ার মাঝখানে আড্রিয়াটিক সাগর। আড্রিয়াটিক সাগর তীরে ইতালির উত্তর-পূর্ব অংশে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন সমুদ্রবন্দর এড্রিয়া। ইতালির পশ্চিমাংশেও ভূমধ্যসাগর অবস্থিত। সাগরের এ অংশকে প্রাচীনকালে বলা হতাে এটুস্কান সাগর । কৃষি বিকাশের সুযােগ ছিল বলে প্রাচীন রােম ছিল কৃষিনির্ভর দেশ। ফলে রােমের আদি অধিবাসীদের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের সংঘর্ষ সাধারণ বিষয় ছিল। যে কারণে এসব সংঘাত-সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে রােমানরা যােদ্ধা জাতিতে পরিণত হতে থাকে। রােমান ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, নানা উত্থান-পতন, ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ৭৫৩ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে রােম নগরী প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান বর্বর। জাতিগুলাের হাতে রােমান সম্রাজ্যের চূড়ান্ত পতন হয় ।

রােম নগরী ও রােমান শাসনের পরিচয় :

গুরুত্বপূর্ণ টাইবার নদীর উৎসমুখ থেকে প্রায় বারাে-তেরাে মাইল দূরে সাতটি পর্বতশ্রেণির ওপর রােম অবস্থিত। এজন্য একে সাতটি পর্বতের নগরীও বলা হয় । ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ইন্দো-ইউরােপীয় গােষ্ঠীর একদল মানুষ ইতালিতে বসবাস শুরু করে। তাদেরকেই লাতিন বলা হতাে। তাদের নাম অনুসারে ভাষার নামও হয় লাতিন ভাষা। লাতিন রাজা রােমিউলাস রােম নগরীর প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নাম অনুযায়ী নগরের নাম হয় রােম। রােমের গণতন্ত্র একদিনে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ধাপে ধাপে নানা সংস্কার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রােমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় । ঐতিহাসিকরা রােমান ইতিহাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছেন।

যথা :৭৫৩-৫১০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ছিল রাজতন্ত্রের যুগ। এ যুগে সাতজন সম্রাট দেশ শাসন করেন। এ যুগের সর্বশেষ সম্রাট টারকিউনিয়াস সুপারকাসকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর রােমে প্রজাতন্ত্রের সূত্রপাত হয়। এই প্রজাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চলে ৫০০ থেকে ৬০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত। রােমে প্রজাতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে জনগণ বিদ্রোহী নেতা ব্রুটাস এবং অপর এক ব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে শাসনের সুযােগ প্রদান করে। রাজতন্ত্রের পতনের পর রােমের জনগণ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে, প্যাট্রিসিয়ান অর্থাৎ অভিজাত শ্রেণি, আর প্লিবিয়ান যারা সাধারণ নাগরিক। ক্ষুদ্র কৃষক, কারিগর, বণিকরা প্লিবিয়ান শ্রেণিভুক্ত।

প্রজাতন্ত্রের প্রথম ২০০ বছর ছিল প্যাট্রিসিয়ান ও প্লিবিয়ানদের মধ্যে সংঘাতের ইতিহাস। সমাজে প্লিবিয়ানরা বঞ্চিত শ্রেণি ছিল। অধিকারবঞ্চিত প্লিবিয়ানরা ক্রমাগত সংগ্রাম করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্লিবিয়ানরা কিছু অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয় । প্লিবিয়ানদের দাবির মুখে রােমান আইন সংকলিত হতে থাকে। ৪৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ প্লিবিয়ানরা ব্রোঞ্জপাতে ১২টি আইন লিখিতভাবে প্রণয়ন করে। আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে দু’জন কনসালের মধ্যে একজন প্লিবিয়ানদের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এভাবে, রােমান প্রজাতন্ত্র গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হয় ।

রােমে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেও ক্রমে দেশটি সম্রাজ্যবাদী শক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করতে থাকে। স্বল্প সময়ের মধ্যে রােম সমগ্র ইতালির ওপর প্রভাব বিস্তারে তৎপর হয়। ১৪৬ থেকে ৪৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রােমান সভ্যতার অন্ধকার যুগ। ধনী-দরিদ্র সংঘাত, দাস বিদ্রোহ, ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণে চরম বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, সহিংসতায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে রােম।। রােমের অর্থনীতি ছিল দাসদের ওপর নির্ভরশীল। শাসকদের অমানুষিক নির্যাতনে দাসরা স্পার্টাকাসের নেতৃত্বে। বিদ্রোহ ঘােষণা করে। দুই বছরব্যাপী তারা তাদের বিদ্রোহ টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়। ৭১ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে স্পার্টাকাস নিহত হলে বিদ্রোহের অবসান হয় ।

চরম নির্যাতন নেমে আসে দাসদের ওপর। অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ছাড়াও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে রােম। ফলে উচ্চাকাঙ্ক্ষী সামরিক নেতারা ক্ষমতায় আসতে থাকেন এবং রােমে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষমতার দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে সমঝােতার ভিত্তিতে তিনজন নেতা 3 একযােগে ক্ষমতায় আসেন, যা ইতিহাসে ত্রয়ী শাসন নামে পরিচিত। বিশাল রােম সাম্রাজ্যকে তিন ভাগ করে শাসনের দায়িত্ব নেন অক্টেভিয়াস সিজার, মার্ক এন্টনি ও লেপিডাস। লেপিডাসের দায়িত্বে ছিল আফ্রিকার প্রদেশসমূহ, অক্টেভিয়াস সিজারের দায়িত্বে ছিল ইতালিসহ সাম্রাজ্যের পশ্চিম অংশ, এন্টনির দায়িত্বে ছিল পূর্বাঞ্চল । তবে তিনজনের শাসন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ প্রত্যেকেরই আকাঙ্ক্ষা ছিল রােমের একচ্ছত্র অধিপতি বা সম্রাট হওয়ার ।

ফলে, খুব শীঘ্রই আবার ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়ে যায়। অক্টেভিয়াস সিজার পরাজিত করে লেপিডাসকে, এদিকে মার্ক এন্টনি মিশরের রাজকন্যা ক্লিওপেট্রাকে বিয়ে করে তার শক্তি বৃদ্ধি করেন। কিন্তু অক্টেভিয়াস সিজারের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরাজিত হন। ক্ষমতা দখল করে অক্টেভিয়াস সিজার অগাস্টাস সিজার নাম ধারণ করে সিংহাসন আরােহণ করেন। ইতিহাসে তিনি এই নামেই বেশি পরিচিত। ১৪ খ্রিষ্টাব্দে অগাস্টাস সিজারের মৃত্যু হয়। তার সময়ে সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য ঘটনা যিশুখ্রিষ্টের জন্ম। অগাস্টাস সিজারের মৃত্যুর পর রােমে আবার বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বিদেশি আক্রমণ, বিশেষ করে জার্মান বর্বর গােত্রগুলাের আক্রমণ তীব্র হতে থাকে। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার কোন্দলের কারণে রােমানদের শক্তি ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে। রােমের শেষ সম্রাট রােমিউলাস অগাস্টুলাস জার্মান বর্বর গােত্রের তীব্র আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হলে ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে রােমান সম্রাজ্যের চূড়ান্ত পতন ঘটে। ইতােমধ্যে খ্রিষ্ট ধর্মের অগ্রযাত্রা শুরু হয় এবং জার্মানদের উত্থান ঘটে।

সভ্যতায় রােমের অবদান :

রােম শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, স্থাপত্য সর্বক্ষেত্রে গ্রিকদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা এসব বিষয়ে গ্রিকদের অনুসরণ ও অনুকরণ করেছে। তবে সামরিক সংগঠন, শাসন পরিচালনা, আইন ও প্রকৌশল বিদ্যায় তারা গ্রিক ও অন্যান্য জাতির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আধুনিক বিশ্ব রােমানদের কাছে ব্যাপক ঋণী।

শিক্ষা, সাহিত্য ও লিখন পদ্ধতি :

এ সময়ে শিক্ষা বলতে বুঝাতে খেলাধুলা ও বীরদের স্মৃতিকথা বর্ণনা করা। যুদ্ধবিগ্রহের মধ্য দিয়ে রােমের যাত্রা শুরু হয়েছিল। সুতরাং তাদের সব কিছুই ছিল যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। তারপরও উচ্চ শ্রেণিভুক্ত রােমানদের গ্রিক ভাষা শিক্ষা ছিল একটি ফ্যাশন। ফলে এদের অনেকেই গ্রিক সাহিত্যকে লাতিন ভাষায় অনুবাদ করার দক্ষতা অর্জন করে। রােমের অভিজাত যুবকরা গ্রিসের বিভিন্ন বিখ্যাত বিদ্যাপীঠে শিক্ষালাভ করতে যেত। সে যুগে সাহিত্যে অবদানের জন্য পুটাস ও টেরেন্সর বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। এরা দু’জন মিলনাত্মক নাটক রচনার ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। সাহিত্য ক্ষেত্রে সবচেয়ে উন্নতি দেখা যায় অগাস্টাস সিজারের সময়। এ যুগের কবি হােরাস ও ভার্জিল যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ভার্জিলের মহাকাব্য ইনিভ’ বহু ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ওভিদ ও লিভি এ যুগের খ্যাতনামা কবি। লিভি ইতিহাসবিদ হিসেবেও বিখ্যাত ছিলেন। বিখ্যাত ঐতিহাসিক ট্যাসিটাসও এ যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও বিজ্ঞান :

রােমান স্থাপত্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল এর বিশালতা। সম্রাট হার্ডিয়ানের তৈরি ধর্মমন্দির প্যানথিয়ন রােমানদের স্থাপত্যের এক অসাধারণ নিদর্শন। ৮০ খ্রিষ্টাব্দে রােমান সম্রাট টিটাস কর্তৃক নির্মিত কলােসিয়াম নাট্যশালা নির্মিত হয়, যেখানে একসঙ্গে ৫৬০০ দর্শক বসতে পারত। স্থাপত্যকলার পাশাপাশি রােমান ভাস্কর্যেরও উল্কর্ষ সাধিত হয়েছিল । রােমান ভাস্করগণ দেব-দেবী, সম্রাট, দৈত্য, পুরাণের বিভিন্ন চরিত্রের মূর্তি তৈরি করতেন মার্বেল পাথরের। বিজ্ঞানীদের মধ্যে কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হন। তাদের মধ্যে প্লিনি বিজ্ঞান সম্পর্কে বিশ্বকোষ প্রণয়ন করেন। এতে প্রায় পাঁচশ’ বিজ্ঞানীর গবেষণাকর্ম স্থান পেয়েছে। তাছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞানে রােমানদের অবদান ছিল । বিজ্ঞানী সেলসাস চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর বই লেখেন। এছাড়া চিকিৎসাশাস্ত্রে গ্যালেন রুফাসে অসামান্য অবদান রেখেছেন।

ধর্ম, দর্শন ও আইন:

রােমানরা ধর্মীয় ক্ষেত্রেও গ্রিকদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। অনেক গ্রিক দেব-দেবীর নাম পরিবর্তন হয়ে রােমানদের দেব-দেবী হয়েছে। রােমানদের অন্যতম প্রধান দেবতার নাম ছিল জুপিটার। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেব-দেবী হচ্ছে জুনাে, নেপচুন, মাস, ভলকান, ভেনাস, মিনার্ভা, ব্যাকাস ইত্যাদি। রােমান দেবমন্দিরে প্রধান পুরােহিত ছিলেন যাঁরা, তাঁরা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। তবে রােমানদের পরকালের প্রতি বিশ্বাস ছিল না। অগাস্টাস সিজারের সময় থেকে ঈশ্বর হিসেবে সম্রাটকে পূজা করার রীতি চালু হয়। উল্লেখ্য, এ সময় খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্টের জন্ম হয়। পরবর্তীকালে রােমান ধর্মের পাশাপাশি খ্রিষ্টধর্ম বিস্তার লাভ করতে থাকে।

অনেক রােমান এই ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করে। এতে সম্রাট ক্ষুব্ধ হন কারণ খ্রিষ্টধর্মের অনুশাসন মেনে চলতে গেলে সম্রাটকে আর ঈশ্বরের মতাে পূজা করা যায় না। ফলে রােমান সম্রাটরা এই ধর্ম প্রচার বন্ধ করে দেন এবং খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণকারী রােমানদের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। কিন্তু সম্রাট কন্সটানটাইন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং এই ধর্মকে রােমান সরকারি ধর্মে পরিণত করেন। অনেকে মনে করেন যে, রােমীয় দর্শন গ্রিক দর্শনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। তবুও রােমান দর্শনে সিসেরাে, লুক্রেটিয়াস (খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ৯৮-৫৫) তাঁদের সুচিন্তিত দার্শনিক মতবাদ দ্বারা অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। রােমে স্টোইকবাদী দর্শন যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। ১৪০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ রােডস দ্বীপের প্যানেটিয়াস এই মতবাদ রােমে ও প্রথম প্রচার করেন।

বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে রােমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান হচ্ছে আইন প্রণয়ন। খ্রিষ্টপূর্ব পাঁচ শতকের মাঝামাঝি সময়ে রােমানরা ফৌজদারি ও দেওয়ানি আইনগুলাে সুষ্ঠুভাবে একসঙ্গে সাজাতে সক্ষম হন। ৫৪০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ১২টি ব্রোঞ্জ পাতে সর্বপ্রথম আইনগুলাে খােদাই করে লিখিত হয় এবং জনগণকে দেখাবার জন্য প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়। রােমান আইনের দৃষ্টিতে সকল মানুষ সমান । রােমান আইনকে তিনটি শাখায় ভাগ করা হয়েছে। যেমন—
১. বেসামরিক আইন : এই আইন পালন করা রােমান নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল । এই আইন | লিখিত অলিখিত দুই রকম ছিল।
২. জনগণের আইন : এ আইন সকল নাগরিকের জন্য প্রযােজ্য ছিল। তাছাড়া ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষার বিষয়টি এই আইনে ছিল। তবে এর মাধ্যমে দাসপ্রথাও স্বীকৃতি লাভ করে। সিসেররা এ আইনের প্রণেতা।
৩. প্রাকৃতিক আইন : এ আইনে মূলত নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে। আধুনিক বিশ্ব সম্পূর্ণভাবে রােমান আইনের ওপর নির্ভরশীল। খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতকে সম্রাট জাস্টিনিয়ান প্রথম সমস্ত রােমান আইনের সংগ্রহ ও সংকলন প্রকাশ করেন।

অনুশীলনমূলক প্রশ্ন

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :

১. মিশরীয়রা সর্বপ্রথম কয়টি ব্যঞ্জনবর্ণ আবিষ্কার করে?
ক. ২৩টি
খ. ২৪টি
গ. ২৫টি
ঘ. ২৬টি

২. মিশরীয়দের কাছে ধর্ম এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কেন?
ক. মিশরীয়রা সর্বক্ষেত্রে ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত ছিল
খ. অভিজাত সম্প্রদায় ধর্মের গুরুত্ব দিত
গ. পুরােহিতরা দেশ শাসন করত
ঘ. মিশরীয়রা ধর্মে বিশ্বাসী ছিল

নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
অলিম্পিক ক্রীড়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের পরিবেশনা দেখে সীমা ও তার পরিবার অভিভূত হয়। অনুষ্ঠান দেখে সীমার একটি সভ্যতার কথা মনে পড়ল এবং সে তার স্কুলে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে ধারণা নেয়।

৩. সীমার কোন সভ্যতার কথা মনে পড়ে?
ক. রােমান
গ. চৈনিক
ঘ. সিন্ধু
খ. গ্রিক

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button