আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
জীবনযাপনস্বাস্থ্য টিপস

পরিচিত কেউ বিষ খেলে কী করবেন?

বিষ খেলে করনীয়: যে সব বস্তু বা গ্যাস যথেষ্ট পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করলে প্রাণের ক্ষতি বা বিনাশ করে তাদের বিষ বলা হয়। এগুলি তিন ভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে:

  • ফুসফুসের মাধ্যমে
  • ত্বকের মাধ্যমে
  • মুখ দিয়ে

ফুসফুসের মাধ্যমে বিষক্রিয়া নিয়ে শ্বাসগ্রহণ অধ্যায়ে আলােচনা করা হয়েছে। এখানে তাই, আমরা শুধুমাত্র ত্বক ও মুখের মাধ্যমে দুর্ঘটনাবশতঃ বা ইচ্ছাকৃতভাবে যে সব বিষ শরীরে প্রবেশ করে সেগুলি নিয়েই আলােচনা করব। স্পর্শের ফলে উৎপন্ন বিষক্রিয়াগুলি কিছু নির্দিষ্ট উদ্যান ও কৃষিকাজ সংক্রান্ত কীটনাশক থেকে ঘটে, এবং সেইসব পরিস্থিতির চিকিৎসাও এখানে দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ বিষক্রিয়াই দুর্ঘটনাবশতঃ হয়ে থাকে, এবং দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে সুবুদ্ধিপূর্ণ সতর্কতা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাধানিষেধ

  • কখনাে বাচ্চাদের হাতের নাগালে ট্যাবলেট বা ওষুধপত্র রাখবেন না। ওগুলিকে একটি তালাবন্ধ দেরাজে রাখুন, হাতের নাগাল থেকে যথেষ্ট দূরে (যেমন আলমারির মাথায়)
  • কখনাে ট্যাবলেট বা ওষুধ অনেক দিন ধরে জমিয়ে রাখবেন না। ওগুলাে খারাপ হয়ে যায়, এবং চিকিৎসার কোর্স শেষ হয়ে গেলে বাড়তি ওষুধ হয় ফেরত দিয়ে দেবেন (দোকানে বা চিকিৎসকের কাছে) অথবা পায়খানায় ফেলে দিয়ে জল ঢেলে দেবেন।
  • কখনাে অন্ধকারে ওষুধ খাবেন না- ওষুধ খাবার বা খাওয়ানাের আগে সবসময় লেবেল পড়ে দেখবেন।
  • কখনাে লেমনেড বা অন্য পানীয়র বােতলে ক্ষতিকারক তরল ঢেলে রাখবেন না। বাচ্চারা বােতলটি চিনতে পারবে ও তরলটি পান করে ফেলবে।
  • কখনাে সিংকের নিচে ঘর পরিষ্কার করার ক্লিনার ও সাবান (ডিটারজেন্ট) রাখবেন না যেখানে ছােট বাচ্চারা তা খুঁজে পেতে পারে। (এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালাে, ব্লিচ এবং ল্যাভেটরি ক্লিনার একসঙ্গে মেশালে ল্যাভেটরি আদৌ আরাে বেশি পরিষ্কার হয় না, তবে একটা বিষাক্ত গ্যাস অবশ্যই উৎপন্ন হয় যা নিঃশ্বাসের সঙ্গে ভেতরে গেলে বিষক্রিয়া ঘটায়।)
  • কখনাে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বমি করাবেন না: কখনাে প্রচুর পরিমাণে নুনজল খাওয়াবেন না
  • কখনাে মুখ দিয়ে কিছু খাওয়াবেন না(যদি না মুখ পােড়া থাকে ও আক্রান্ত ব্যক্তি সজ্ঞানে থাকেন)
  • আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান অবস্থায় থাকলে কখনাে মুখ দিয়ে কিছু খাওয়াতে চেষ্টা করবেন না
  • কখনাে পেট্রোলিয়াম সম্বন্ধিত বস্তু গিলে ফেলেছে এমন কোনাে আক্রান্ত ব্যক্তির বমি করার জন্য অপেক্ষা করবেন না: আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রথম থেকেই রিকোভারি পােজিশনে(রােগ নিবৃত্তি অবস্থা) রাখতে হবে, যাতে তার মাথাটি হৃদয়ের থেকে নিচে থাকে।
  • কখনাে কোনাে ট্যাবলেট, বিশেষ করে ঘুমের ট্যাবলেটের সঙ্গে মদ খাওয়াবেন না বা খাবেন না- মিশ্রণটি প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে

কিছু সাধারণ বিষ

রােজকার জীবনে দেখতে পাওয়া আরাে কিছু সাধারণভাবে পরিচিত বিষের উদাহরণ দেওয়া হচ্ছে। এগুলি হল:

  • নানা রকম বীজহীন রসাল ছােট ফল ও বীজ
  • ছত্রাক: ব্যাঙের ছাতা
  • পচে যাওয়া খাবার
  • কড়া রাসায়নিক: প্যারাফিন, পেট্রল ব্লিচ, আগাছা নাশক, রাসায়নিক সার
  • ওষুধ: অ্যাসপিরিন, ঘুমের বড়ি, ট্র্যাংকুইলাইজার, আয়রন (লােহা) বড়ি
  • পশুর টোপ: ইঁদুর মারা বিষ।
  • মদ
  • কাঁচা (সবুজ) আলু। (সবুজ আলু যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে এ কথা সাধারণত উপলব্ধি করা হয় না। তার ফলে পেট ব্যথা, বমি ও শেষ পর্যন্ত ডায়রিয়া ও সম্ভাব্য পতন হতে পারে।)

সাধারণ চিকিৎসা আক্রান্ত ব্যক্তি সজ্ঞান বা অজ্ঞান অবস্থায় থাকতে পারেন, এবং প্রথমটি হলে, আপনার কাজে হয়তাে কিছুটা সাহায্যও করতে পারেন।

স্বাস্থ্য টিপস থেকে আরো পড়ুন

  1. আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান থাকতে থাকতে কী খাওয়া হয়েছে, কতটা পরিমাণে ও কখন খাওয়া হয়েছে জানার চেষ্টা করুন
  2. আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি যদি কোনাে ট্যাবলেট, খালি শিশিবােতল বা কৌটো থাকে তাহলে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য সেগুলি রেখে দিন। এর ফলে কী বিষ খাওয়া হয়েছে তা সনাক্ত করতে সাহায্য হতে পারে।
  3. আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের ভেতরটা পরীক্ষা করে দেখুন। যদি পুড়ে যাবার প্রমাণ থাকে তাহলে যতটা তিনি পান করতে পারেন ততটা দুধ বা জল পান করতে দিন।
  4. যদি আক্রান্ত ব্যক্তি বমি করেন- একটি পাত্র বা পলিথিন ব্যাগে বমিটা ধরে রাখুন ও হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য রেখে দিন। এর ফলেও কী বিষ খাওয়া হয়েছে তা সনাক্ত করতে সাহায্য হতে পারে।
  5. আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান। আপনার কাছে থাকাকালীন যদি আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান
    থাকে বা জ্ঞান হারিয়ে যায় তাহলে:
  6. প্রথমে শ্বাসপ্রশ্বাস দেখুন। বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকলে অবিলম্বে জীবনের চুম্বন (কিস অফ লাইফ) প্রক্রিয়া শুরু করুন। তবে যদি আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ ও ঠোঁট পুড়ে গিয়ে থাকে, তাহলে কিস অফ লাইফ পদ্ধতি ব্যবহার করবেন না; এক্ষেত্রে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস পদ্ধতি প্রয়ােগ করতে হবে

যদি আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস তখনও চলতে থাকে, তাহলে তাঁকে পা দুটি উঁচু করে রিকভারি পােজিশনে রাখুন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় বাচ্চাদের আপনার কোলের উপর আলতাে করে মাথা নিচু করে শুইয়ে রাখতে পারেন

  • আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে লক্ষ্য রাখুন। অনেক বিষ আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচল বন্ধ করে দেবে
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে শীতল রাখুন; কপালে একটি ঠাণ্ডা পটি দিন এবং ঘাড়, মেরুদণ্ড ও শরীর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুছিয়ে দিন।
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত বেশি পরিমাণে সম্ভব শীতল পানীয় গ্রহণ করতে উৎসাহিত করুন
  • পেশির সংকোচন ও ফিট আরম্ভ হচ্ছে কি না সে দিকে লক্ষ্য রাখুন।
  • আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে গেলে, শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে লক্ষ্য রাখুন ও আক্রান্ত ব্যক্তিকে রিকভারি পােজিশনে রাখুন।
  • বিষের পাত্রটি সবসময়ে রেখে দেবেন।

তাতে হয়তাে চিকিৎসার জন্য মন্তব্য থাকতেও পারে, তবে চিকিৎসকের ওটি দেখাও দরকার

ত্বকের মাধ্যমে বিষক্রিয়া

আজকাল প্রচুর কীটনাশকে, বিশেষ করে মালী ও কৃষকরা যেগুলি ব্যবহার করেন তাতে, শক্তিশালী রাসায়নিক থাকতে পারে (যেমন ম্যালাথিয়ন) যা, ত্বকের সংস্পর্শে এলে, শরীরে প্রবেশ করতে পারে, যার ফল মারাত্মক হবার সম্ভাবনা। ইঙ্গিত

  • কীটনাশকের সংস্পর্শ বা দূষণের কথা জানা
  • কাঁপুনি, পেশির সংকোচন ও ফিট।
  • আক্রান্ত ব্যক্তি ধীরে ধীরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা পরিচর্যা
  • দূষিত অঞ্চলটি ভালাে ভাবে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে দিন।
  • কোনাে দূষিত কাপড়জামা থাকলে সাবধানে খুলে দিন, এবং আপনার শরীরে যাতে রাসায়নিকটি না লাগে সে বিষয়ে সাবধান থাকুন।
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ্বস্ত করুন, তাঁকে শুইয়ে দিন ও স্থির ও চুপচাপ থাকতে উৎসাহিত করুন
  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করুন।
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে শীতল রাখুন; কপালে একটি ঠাণ্ডা পটি দিন এবং ঘাড়, মেরুদণ্ড ও শরীর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুছিয়ে
    দিন।
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত বেশি পরিমাণে সম্ভব শীতল পানীয় গ্রহণ করতে উৎসাহিত করুন।
  • পেশির সংকোচন ও ফিট আরম্ভ হচ্ছে কি না সে দিকে লক্ষ্য রাখুন।
  • আগন্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে গেলে, শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে লক্ষ্য রাখুন ও আক্রান্ত ব্যক্তিকে রিকোভারি পােজিশনে(রােগ নিবৃত্তি অবস্থা) রাখুন।
  • বিষের পাত্রটি সবসময়ে রেখে দেবেন। তাতে হয়তাে চিকিৎসার জন্য মন্তব্য থাকতেও পারে, তবে চিকিৎসকের ওটি দেখাও দরকার

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button