আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
বাংলাদেশ বিষয়াবলী

জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর প্রথমবারের মতাে বাংলায় ভাষণ

১৯৭৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্যদেশের মর্যাদা লাভ করে। এর মাত্র ৭ দিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু বাংলায় ভাষণ দেন। এ উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান। জাতিসংঘে এটিই ছিল প্রথম বাংলায় ভাষণ।

গত শতাব্দীর শুরুতে ১৯১৩ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নােবেল পুরস্কার পেয়ে বাংলা ভাষাকে সারা বিশ্বে পরিচয় করান। এর ছয় দশক পর বাঙালি জাতির মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বাংলা ভাষাকে আবারও বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন।

বাংলায় দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মাধ্যমেই জাতিসংঘের সদস্য পৃথিবীর সব দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারে বাংলা ভাষার কথা, জানতে পারে বাংলাভাষী বাঙালি জাতির জন্য আছে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ। জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম বাংলায় ভাষণ স্মরণে ই-পােস্টার প্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

অন্যদিকে এই দিনকে স্মরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে পালন করে আসছে। ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ভাষণ প্রদানের ৪৭তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হয়েছিল এবং ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর সেই ভাষণ প্রদানের ৪৮তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হবে। বাংলাকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার বিশেষ এই দিনকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ও বিশ্বের বাংলাভাষী সব মানুষই বঙ্গবন্ধুকে বিশেষ শ্রদ্ধায় স্মরণ করবেন।

প্রশ্নোত্তরে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ

  • জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে—১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪।
  • বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন—২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪।
  • বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন সংস্থাটির—২৯তম সাধারণ অধিবেশনে।
  • ১৯৭৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে দেওয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের দিনটিকে
  • যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’হিসেবে পালন করে আসছে—২০১৯ সাল থেকে।
  • ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ বঙ্গবন্ধুর জাতিসংঘে ভাষণ প্রদানের—৪৮তম বার্ষিকী।
  • ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় দেওয়া সেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী ভাষণের ইংরেজি অনুবাদ পাঠ করেছিলেন—ফারুক চৌধুরী (লন্ডনে বাংলাদেশের তকালীন ডেপুটি হাইকমিশনার)।
  • জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হন—সৈয়দ আনােয়ারুল করিম।
  • জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শেখ হাসিনা বাংলা ভাষায় প্রথম ভাষণ দেন—২৪ অক্টোবর ১৯৯৬ (৫১তম অধিবেশনে)।
  • ২০২১ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সর্বশেষ ভাষণটি ছিল বাংলা ভাষায় তাঁর দেওয়া—১৮তম ভাষণ।
  • ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ক্ষমা ‘ প্রদর্শন করার কথা বলেছিলেন—১৯৫ জন যুদ্ধবন্দীর।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত হয়। এরপর বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি ও জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করা। ১৯৭২ সালে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তির লক্ষ্যে তৎপরতা চালায়।

বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ৮ আগস্ট সদস্যপদের জন্য আবেদন পাঠায়। ১১ আগস্ট নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আবেদনটি পুনরায় বিবেচনার জন্য ২১ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করতে সব সদস্যই সম্মত হয়। ২৩ আগস্ট বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য একটি প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু চীনের ভেটো প্রয়ােগের কারণে পর পর দু বারই বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হতে ব্যর্থ হয়।

১৯৭৪ সালে জুনে বাংলাদেশ পুনরায় আবেদন করে। ১৯৭৪ সালের ১০ জুন নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের সদস্য পদ লাভের প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলে প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশসহ সাধারণ পরিষদে পাঠানাে হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।

সেদিন গ্রানাডা ও গিনি বিসাউও জাতিসংঘের ১৩৭তম ও ১৩৮তম সদস্যপদ লাভ করে। ১৭ মে ১৯৭২ বাংলাদেশকে জাতিসংঘ সংস্থায় সদস্যরূপে প্রথম স্বাগত জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর পরপরই বাংলাদেশ জাতিসংঘের বেশিরভাগ বিশেষায়িত অঙ্গ সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button