আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
সামাজিক বিজ্ঞান

হাজী শরীয়তউল্লাহ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

হাজী শরীয়তউল্লাহ ১৭৮১ সালে শরীয়তপুর জেলার শামাইল নামক গ্রামে এক মধ্যবিত্ত তালুকদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় গমন করে মাওলানা বাশারত আলীর কাছে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি আরবি ও ফারসি ভাষায় শিক্ষালাভ করেন। ১৭৯৯ সালে তিনি পবিত্র হজ সম্পন্ন করতে মক্কা শরীফ গমন করেন। তথায় তিনি হানাফী এবং কাদেরীয়া তরিকার সুফি মতবাদে শিক্ষা গ্রহণ করেন।

তিনি দুই বছর কায়রাের জামিয়া-আল-আজহার শিক্ষাকেন্দ্রে অবস্থান করেন। ১৮১৮ সালে তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ফরায়েজি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তউল্লাহ ছিলেন একজন ধর্ম ও সমাজসংস্কারক। তিনি মুসলমান সমাজকে অনৈসলামিক কার্যকলাপ থেকে সরিয়ে আনতে সচেষ্ট হন। সেজন্য ধর্মের ফরযগুলাে যথাযথ পালনের ওপর তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরােপ করেন। তাঁর ফরায়েজি আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম সমাজকে আত্মচেতনায় উদ্বুদ্ধ করা, নৈতিক দিক দিয়ে বলীয়ান করা, ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা, কর্তব্য ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, কৃষক প্রজাদেরকে সরকার, জমিদার ও নীলকরদের অত্যাচার এবং উৎপীড়ন থেকে মুক্ত করে তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা।

ফরায়েজি আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র ছিল ফরিদপুর জেলা। এছাড়া ঢাকা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা প্রভৃতি জেলায় এ আন্দোলন জনপ্রিয়তা লাভ করে। শরীয়তউল্লাহর জনপ্রিয়তা দেখে স্থানীয় হিন্দু জমিদারগণ ফরায়েজি আন্দোলনের বিরােধিতা শুরু করেন। তারা প্রজাদের ওপর নানা প্রকার অবৈধ কর আরােপ করতেন। দুর্গাপূজা, কালীপূজা প্রভৃতি হিন্দু উৎসবের জন্য মুসলমানদের কাছ থেকে কর আদায় করতেন।

ঈদ উপলক্ষে কোনাে কোনাে হিন্দু জমিদার গরু কোরবানি করতে নিষেধ করতেন। এভাবে নানারকম অজুহাতে হিন্দু জমিদারগণ ফরায়েজিদের অত্যাচার করতে থাকেন। হাজী শরীয়তউল্লাহ তাদেরকে রক্ষার জন্য একটি লাঠিয়াল বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয় তাঁর শিষ্য জালালউদ্দিন মােল্লার ওপর। জমিদারগণ বিভিন্ন উপায়ে তাকে হয়রানি করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের উৎপীড়ন ও বিরােধিতা কিছুতেই ফরায়েজিদের অগ্রগতি রােধ করতে পারেনি।

শরীয়তউল্লাহ তাঁর অনুসারীদেরকে নীলকরদের অত্যাচার, নিপীড়ন ও শােষণ থেকে মুক্ত করতে সচেষ্ট ছিলেন। তাঁর সবচেয়ে বড় সাফল্য হল তিনি বাংলার কৃষকদের মধ্যে জাগরণ সঞ্চার করেন। তারই নেতৃত্বে কৃষকেরা জমিদারদের শশাষণের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হওয়ার শক্তি সঞ্চার করে। হাজী শরীয়তউল্লাহ ১৮৪০ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button