সামাজিক বিজ্ঞান

সমাজ কী? সমাজের উপাদান গুলো কি কি আলোচনা কর

সমাজ কী?

সমাজ বলতে সাধারণত সংঘবদ্ধ জনসমষ্টিকে বােঝায়। অর্থাৎ যখন বহুলােক একই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করে তখন তাকে সমাজ বলে। সাধারণত দুইটি বৈশিষ্ট্য থাকলে যে কোনাে জনসমষ্টিকে সমাজ বলা যেতে পারে, যথা-

  • বহুলােকের সংঘবদ্ধ বসবাস এবং
  • ঐ সংঘবদ্ধতার পেছনে কোনাে উদ্দেশ্য।

সমাজবিজ্ঞানী জিসবার্ট-এর মতে, “সমাজ হল সামাজিক সম্পর্কের জটিল জাল, যে সম্পর্কের দ্বারা প্রত্যেক মানুষ তার সঙ্গীদের সঙ্গে সম্পর্কে যুক্ত”।

যখন একজন মানুষ অপর একজনকে জানবে, তার সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদান করবে, এবং এক জন আরেক জন সম্পর্কে সচেতন হবে, তখনই সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

অর্থাৎ মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলামেশার ফলে যে সম্পর্কের সৃষ্টি হয়, তাই সামাজিক সম্পর্ক। এ সম্পর্ক যে কোনাে ধরনের হতে পারেসহযােগিতার সম্পর্ক, প্রতিযােগিতার সম্পর্ক, স্নেহ-ভালবাসার সম্পর্ক, ঘৃণার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক, পিতাপুত্রের সম্পর্ক, শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক ইত্যাদি।

সমাজের উপাদান

সমাজ হল পারস্পরিক সামাজিক সম্পর্কের সম্বন্ধযুক্ত মনুষ্যগােষ্ঠী। অর্থাৎ যখন বহু ব্যক্তি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সংঘবদ্ধ হয়ে বসবাস করে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তােলে তখন ঐ জনসমষ্টিকে সমাজ বলে। এখন প্রশ্ন হল কী কী উপাদান দ্বারা সমাজ গঠিত ? সমাজ বিভিন্ন উপাদান দ্বারা গঠিত। যথা

সংঘবদ্ধ মানুষ :

সমাজের প্রধান উপাদান হল সংঘবদ্ধ মানুষ। মানুষ ছাড়া সমাজের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না।

পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতা :

পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতা না থাকলে সমাজস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। আর সামাজিক সম্পর্কহীন মনুষ্যগােষ্ঠীকে সমাজ বলা যায় না। সুতরাং মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সচেতনতাকে সমাজ গঠনের অন্যতম উপাদান হিসেবে অভিহিত করা যায়।

সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য :

সমাজ গঠন করতে যেমন কতগুলাে মানুষের প্রয়ােজন তেমনি ঐ সব মানুষের মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে অন্তত সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য থাকতে হয়। আর এ সম্বন্ধে তাদের মধ্যে অল্পবিস্তর চেতনা থাকাও জরুরি। সামাজিক সম্পর্কহীন মনুষ্যগােষ্ঠীকে সমাজ বলা যায় না। কেবলমাত্র সমাজের মধ্যে সাদৃশ্যই থাকবে, এটা ঠিক নয়। যেসব মানুষ নিয়ে সমাজ গঠিত, সেসব মানুষের মধ্যে অনেক বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।

সহযােগিতা :

সহযােগিতা হল সমাজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ সহযােগিতা ছাড়া সমাজ টিকে থাকতে পারে না। পারস্পরিক সহযােগিতা হল সমাজের ভিত্তি।

পরপর নির্ভরশীলতা :

পারস্পরিক নির্ভরশীলতা সমাজের আরেকটি উপাদান। সমাজের মানুষ একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। কারণ মানুষ একা বাঁচতে পারে না। সমাজে এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির সাহায্য-সহযােগিতা ছাড়া স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে না।

সুতরাং উপরের আলােচনায় দেখা যায় যে, সমাজ গঠন করতে যেমন দরকার সমাজবদ্ধ মানুষ, তেমনি প্রয়ােজন মানুষদের মধ্যে সাদৃশ্য, বৈসাদৃশ্য, পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এবং সহযােগিতা। এগুলাে না হলে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। আর সামাজিক সম্পর্ক না হলে কোনাে মনুষ্যগােষ্ঠীকে আমরা সমাজ বলতে পারি না।

Bcs Preparation

BCS Preparation provides you with course materials and study guides for JSC, SSC, HSC, NTRCA, BCS, Primary Job, Bank and many other educational exams.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button