ইসলাম ধর্ম

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

শিরক শব্দের অর্থ অংশীদার সাব্যস্ত করা, একাধিক স্রষ্টা বা উপাস্যে বিশ্বাস করা। ইসলামি পরিভাষায় মহান আল্লাহর সাথে কোনাে ব্যক্তি বা বস্তুকে শরিক করা কিংবা তার সমতুল্য মনে করাকে শিরক বলা হয়। যে ব্যক্তি শিরক করে তাকে বলা হয় মুশরিক। শিরক হলাে তাওহিদের বিপরীত। আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং শিরকের ধারণা খণ্ডন করেছেন। তিনি বলেন-

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

অর্থ : “বলুন (হে নবি!) তিনি আল্লাহ, এক ও অদ্বিতীয়।” (সূরা আল-ইখলাস, আয়াত ১)। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন-

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

অর্থ : “কোনাে কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।” (সূরা আশ-শুরা, আয়াত ১১)। আল-কুরআনে আরও বলা হয়েছে-

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

অর্থ : “যদি সেথায় (আসমান ও জমিনে) আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনাে ইলাহ থাকত তবে উভয়ই ধ্বংস ও হয়ে যেত।” (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত ২২)

আল-কুরআনের এসব আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে আল্লাহ তায়ালার সত্তা ও গুণে অতুলনীয়তার বিষয়টি বােঝা যায়। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে অংশীদার করা নিঃসন্দেহে শিরক ও জঘন্য অপরাধ।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরক চার ধরনের হতে পারে। যথা-

  • আল্লাহ তায়ালার সত্তা ও অস্তিত্বে শিরক করা। যেমন- ঈসা (আ.)-কে আল্লাহর পুত্র মনে করা।
  • আল্লাহ তায়ালার গুণাবলিতে শিরক করা। যেমন- আল্লাহ তায়ালার পাশাপাশি অন্য কাউকে সৃষ্টিকর্তা বা রিযিকদাতা মনে করা।
  • সৃষ্টি জগতের পরিচালনায় কাউকে আল্লাহর অংশীদার বানানাে। যেমন- ফেরেশতাদের জগৎ পরিচালনাকারী হিসেবে মনে করা।
  • ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে শরিক করা। যেমন- আল্লাহ ব্যতীত কাউকে সিজদাহ করা, কারও নামে পশু জবাই করা ইত্যাদি।

শিরকের কুফল ও প্রতিকার

শিরক অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। পৃথিবীর সকল প্রকার জুলুমের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলাে শিরক। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

অর্থ : “নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম।” (সূরা লুকমান, আয়াত ১৩) বস্তুত আল্লাহ তায়ালাই আমাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক। তাঁর প্রদত্ত নিয়ামতই আমরা ভােগ করি। এরপরও কেউ যদি আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে অংশীদার স্থাপন করে তবে তা অপেক্ষা বড় জুলুম আর কি হতে পারে।

আল্লাহ তায়ালা মুশরিকদের প্রতি খুবই অসন্তুষ্ট। তিনি অপার ক্ষমাশীল ও অসীম দয়াময় হওয়া সত্ত্বেও শিরকের অপরাধ ক্ষমা করেন না। আল্লাহ তায়ালা বলেন-

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

অর্থ : “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এতদ্ব্যতীত যেকোনাে পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।” (সূরা আন-নিসা, আয়াত ৪৮) বস্তুত আল্লাহ তায়ালার দয়া, ক্ষমা ও রহমত ব্যতীত দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভ করা কোনাে ক্রমেই সম্ভব নয়। পরকালে মুশরিকদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল-কুরআনে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

শিরক পরিচয় এবং শিরকের কুফল ও প্রতিকার

অর্থ : “যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করবে আল্লাহ তার জন্য অবশ্যই জান্নাত হারাম করে দেবেন। এবং তার আবাস জাহান্নাম।” (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৭২)।

প্রকৃতপক্ষে শিরক ক্ষমার অযােগ্য অপরাধ। এরূপ কাজ থেকে সকলেরই সদাসর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। ভুলক্রমে আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরক করে ফেললে সাথে সাথে পুনরায় ইমান আনতে হবে।

অতঃপর বিশুদ্ধ অন্তরে তওবা করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। সাথে সাথে ভবিষ্যতে এরূপ পাপ না। করার শপথ গ্রহণ করতে হবে। তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা স্বীয় দয়া ও করুণার মাধ্যমে পাপ ক্ষমা করে দিতে পারেন। আমরা অবশ্যই শিরক থেকে বেঁচে থাকব এবং আল্লাহর উপর সুদৃঢ় ইমান এনে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হব। তাহলেই আমাদের ইহকাল ও পরকাল মঙ্গলময় হবে।

Bcs Preparation

BCS Preparation provides you with course materials and study guides for JSC, SSC, HSC, NTRCA, BCS, Primary Job, Bank and many other educational exams.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button