আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
লেখক পরিচিতি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি এবং বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একই সঙ্গে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, প্রবন্ধকার, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, নাট্যকার, গীতিকার, সুরকার, গায়ক, অভিনেতা, নাট্যপ্রযোজক, চিত্রশিল্পী ও দার্শনিক ছিলেন। আদর্শবাদী ও মানবতাবাদী এই মহাপুরুষ মানবকল্যাণ ও সুন্দরের অন্বেষায় আজীবন সাধনা করে গেছেন।

  • জন্ম : ৭ মে ১৮৬১ (২৫ বৈশাখ, ১২৬৮) কলকাতার জোড়াসাঁকোর সম্রান্ত ঠাকুর পরিবারে।
  • পিতা ও মাতা : মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সারদা দেবী।
  • জন্মক্রম : বাব-মার চতুর্দশতম সন্তান এবং অষ্টম পুত্র।

শিক্ষা

বিভিন্ন শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে স্বগৃহে প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। এরপর কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমী ও সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়লেও কোথাও মন বসেনি। শেষ পর্যন্ত আবার বাড়িতেই পড়াশোনার ব্যবস্থা। ১৮৭৮ সালে মেজভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে প্রথমে ইংল্যান্ড গমন। সেখানে কিছুদিন ব্রাইটনে এবং পরে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে মাস তিনেক ইংরেজি সাহিত্য পাঠ। কিন্তু দেড় বছর পর পিতার নির্দেশে শিক্ষা অসম্পন্ন রেখে স্বদেশে ফিরে আসেন (১৮৮০)। দ্বিতীয়বার ইংল্যান্ড যাত্রা করেন ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে (১৮৮১)। কিন্তু শিক্ষা সমাপ্ত করেননি।

লেখালেখির সূচনা

আট বছর বয়সে কবিতা রচনার সূত্রপাত। তেরো বছর বয়সে প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ‘অমৃতবাজার’ নামে একটি দ্বিভাষিক পত্রিকায় (১৮৭৪)। কবিতাটির নাম ‘হিন্দুমেলার উপহার’।

বিবাহ

যশোরের ভবতারিণী দেবীর সাথে; ১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর। পরে শ্বশুরবাড়িতে তার নাম বদলে রাখা হয় মৃণালিনী দেবী।

শান্তিনিকেতন

রবীন্দ্রনাথের পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বীরভূম জেলার বোলপুরে শান্ত-নির্জন স্থানে ২০ বিঘা জমি ক্রয় করে সেখানে একটি একতলা বাড়ি নির্মাণ করে এর নাম দেন শান্তিনিকেতন।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

রবীন্দ্রনাথ সেখানে ১৯০১ সাল থেকে পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানে তিনি ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম’ নামে একটি আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন (১৯০১)। পরবর্তীকালে এটাই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ পায় এবং শিল্প-সংস্কৃতির পীঠস্থানে পরিণত হয় (১৯২১)।

রাজনীতি ও সমাজকল্যাণ

উনিশ শতকের শেষাংশ ও বিশ শতকের শুরুর দিকে বেশ ক’বছর রবীন্দ্রনাথ সক্রিয়ভাবে রাজনীতি ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলে রবীন্দ্রনাথ এর বিরুদ্ধে সভা-সমিতিতে বক্তৃতা, প্রবন্ধ ও দেশাত্মবোধক সঙ্গীত রচনা করেন। শিলাইদহে অবস্থানকালে তিনি দরিদ্র কৃষক ও শ্রমজীবীদের কল্যাণে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯১৭ সালে ভারতে ব্রিটিশ শাসকদের দমননীতির বিরুদ্ধে তিনি নানাভাবে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন । জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশদের প্রদত্ত ‘স্যার’ উপাধি বর্জন করেন (১৯১৯)। এছাড়া তিনি হিন্দু-মুসলিম সংকট, ভারতীয় রাজনীতি ও সমাজনীতি, বিশ্ব পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয়ে বহুবিধ রচনা লিখে সমাজ সচেতনতার পরিচয় দেন।

নোবেল পুরস্কার

১৯১২ সালে তার গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ (Song Offerings) প্রকাশিত হলে ইউরোপ-আমেরিকায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। কবিপ্রতিভা বিশ্বস্বীকৃতি অর্জন করেন ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে ।

গ্রন্থসংখ্যা

রবীন্দ্রনাথ তাঁর আশি বছরের জীবনে আমৃত্যু রচনা করেছেন বহু কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, ভ্রমণ, কাহিনী, প্রবন্ধ, সঙ্গীত, পত্রাবলীসহ অজস্র গ্রন্থ। রবীন্দ্রনাথের বিশাল সাহিত্যভাণ্ডারের মধ্যে রয়েছে ৫৬টি কাব্যগ্রন্থ, ৪টি গীতিপুস্তক, ১১৯টি ছোটগল্প, ১২টি উপন্যাস, ৯টি ভ্রমণকাহিনী, ২৯টি নাটক, ১৯টি কাব্যনাট্য, ১৩টি চিঠিপত্রের বই । আর তাঁর রচিত গানের সংখ্যা ২২৩২টি। এছাড়া তার অঙ্কিত চিত্রাবলীর সংখ্যা প্রায় দুহাজার।

মৃত্যু : ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮)।

সাহিত্যকর্ম

রবীন্দ্রনাথের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের পরিচয় নিচে উল্লেখ করা হলো :

কাব্য

শিরোনাম প্রকাশকাল শিরোনাম প্রকাশকাল
কবিকাহিনী ১৮৭৮ কড়ি ও কোমল ১৮৮৬
চৈতালী ১৯১২ সেজুতি ১৯৩৮
বলাকা ১৯১৫ মানসী ১৮৯০
বনফুল ১৮৮০ নবজাতক ১৯৪০
পূরবী ১৯২৫ সোনার তরী ১৮৯৪
সন্ধ্যাসঙ্গীত ১৮৮২ সানাই ১৯৪০
পুনশ্চ ১৯৩৬ চিত্রা ১৮৯৬
প্রভাতসঙ্গীত ১৮৮৩ রোগশয্যায় ১৯৪১
প্রান্তিক ১৯৩৮ কল্পনা ১৯০০
আরোগ্য ১৯৪১ ক্ষণিকা ১৯০০
জন্মদিনে ১৯৪১ গীতাঞ্জলি ১৯১০
শেষ লেখা ১৯৪১

→ রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ (১৮৭৮)।
→ রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘বনফুল’ (১৮৮০)।
→ প্রথম জীবনে রবীন্দ্রনাথের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য কবিতা ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ ।
→ ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থে মোট ১৫৭টি কবিতা ও গান আছে ।
→ রবীন্দ্রনাথের ‘তীর্থযাত্রী’ কবিতাটি T.S. Eliot-এর “The Journey of the Magi’-এর অনুবাদ ।
→ রবীন্দ্রনাথের প্রথম স্বাক্ষরযুক্ত প্রকাশিত কবিতা ‘হিন্দুমেলার উপহার’ (১৮৭৫)।

উপন্যাস

শিরোনাম প্রকাশকাল শিরোনাম প্রকাশকাল
বৌঠাকুরাণীর হাট ১৮৮৩ ঘরে-বাইরে ১৯১৬
রাজর্ষি ১৮৮৭ যোগাযোগ ১৯২৯
চোখের বালি (মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস) ১৯০৩ শেষের কবিতা ১৯২৯
নৌকাডুবি ১৯০৬ দুই বোন ১৯৩৩
গোরা ১৯১০ মালঞ্চ ১৯৩৩
চতুরঙ্গ ১৯১৬ চার-অধ্যায় ১৯৩৪

→ রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রথম উপন্যাস ‘করুণা’ যা মাসিক ভারতী পত্রিকায় এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় (১৮৭৭-৭৮)।
→ গ্রন্থাকারে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের প্রথম উপন্যাস ‘বৌঠাকুরাণীর হাট’ (১৮৮৩)।
→ বাংলা সাহিত্যের প্রথম মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস ‘চোখের বালি’ ।

প্ৰবন্ধ

শিরোনাম প্রকাশকাল শিরোনাম প্রকাশকাল
বিবিধ প্রসঙ্গ ১৮৮৩ শিক্ষা ১৯০৮
আত্মশক্তি ১৯০৫ শব্দতত্ত্ব ১৯০৯
ভারতবর্ষ ১৯০৬ সংকলন ১৯২৫
সাহিত্য ১৯০৭ মানুষের ধর্ম ১৯৩৩
বিচিত্র প্রবন্ধ ১৯০৭ সাহিত্যের পথে ১৯৩৬
আধুনিক সাহিত্য ১৯০৭ ছন্দ ১৯৩৬
প্রাচীন সাহিত্য ১৯০৭ কালান্তর ১৯৩৭
লোকসাহিত্য ১৯০৭ বাংলা-ভাষা-পরিচয় ১৯৩৮
স্বদেশ ১৯০৮ সভ্যতার সংকট ১৯৪১
সমাজ ১৯০৮

→ রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বিবিধপ্রসঙ্গ’ (১৮৮৩)।

ছোটগল্প

শিরোনাম প্রকৃতি প্রকাশকাল
ভিখারিণী ছোটগল্প ১৮৭৪
গল্পগুচ্ছ প্রথম খণ্ড ছোটগল্প গ্রন্থ ১৯০০
গল্পগুচ্ছ দ্বিতীয় খণ্ড ছোটগল্প গ্রন্থ ১৯২৬
গল্পগুচ্ছ তৃতীয় খণ্ড ছোটগল্প গ্রন্থ ১৯২৭
গল্পগুচ্ছ চতুর্থ খণ্ড ছোটগল্প গ্রন্থ
গল্পসল্প ছোটগল্প গ্রন্থ ১৯৪১
তিন সঙ্গী ছোটগল্প গ্রন্থ ১৯৪১
ঘাটের কথা ছোটগল্প ১৮৮৪
রাজপথের কথা ছোটগল্প ১৮৮৪
মুকুট ছোটগল্প ১৮৮৫
দেনা পাওনা (প্রথম সার্থক ছোটগল্প) ছোটগল্প ১৮৯০
একরাত্রি ছোটগল্প
মহামায়া ছোটগল্প
সমাপ্তি ছোটগল্প
মাল্যদান ছোটগল্প
মধ্যবর্তিনী ছোটগল্প
শাস্তি ছোটগল্প
প্রায়শ্চিত্ত ছোটগল্প
মানভঞ্জন ছোটগল্প
দুরাশা ছোটগল্প
অধ্যাপক ছোটগল্প
নষ্টনীড় ছোটগল্প
স্ত্রীর পত্র ছোটগল্প
রবিবার ছোটগল্প
শেষকথা ছোটগল্প
ল্যাবরেটরী ছোটগল্প
ব্যবধান ছোটগল্প
মেঘ ও রৌদ্র ছোটগল্প
দিদি ছোটগল্প
কর্মফল ছোটগল্প
হৈমন্তী ছোটগল্প
ছুটি ছোটগল্প
পোস্টমাস্টার ছোটগল্প
কাবুলিওয়ালা ছোটগল্প
শুভা ছোটগল্প
অতিথি ছোটগল্প
আপদ ছোটগল্প
গুপ্তধন (অতি প্রাকৃত) ছোটগল্প
জীবিত ও মৃত (অতি প্রাকৃত ছোটগল্প
নিশীথে (অতি প্রাকৃত) ছোটগল্প
মণিহারা (অতি প্রাকৃত) ছোটগল্প
ক্ষুধিত পাষাণ (অতি প্ৰাকৃত) ছোটগল্প

→ রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত ছোটগল্প ‘ভিখারিনী’ (১৮৭৪)।
→ রবীন্দ্রনাথের প্রথম গল্পসংগ্রহের নাম ‘ছোটগল্প’ (১৮৯৩)।
→ রবীন্দ্রনাথকে বলা হয় বাংলা ছোটগল্পের জনক ।

ভ্ৰমণ কাহিনী

শিরোনাম প্রকৃতি প্রকাশকাল
রাশিয়ার চিঠি ভ্ৰমণকাহিনী ১৯১৯
য়ুরোপপ্রবাসীর পত্র ভ্ৰমণকাহিনী ১৮৮১
জাপান যাত্রী ভ্ৰমণ কাহিনী ১৯১৯
পারস্যে ভ্ৰমণ কাহিনী ১৯৩১

আত্মজীবনী

শিরোনাম প্রকৃতি প্রকাশকাল
জীবনস্মৃতি আত্মজীবনী ১৯১২
ছেলেবেলা আত্মজীবনী ১৯৪০
চরিত্রপূজা জীবনী ১৯০৭

নাটক, গীতিনাট্য ও প্রহসন

শিরোনাম প্রকৃতি প্রকাশকাল
বাল্মীকি প্রতিভা নাটক ১৮৮১
কালমৃগয়া গীতিনাট্য ১৮৮২
মায়ার খেলা নাটক ১৮৮৮
চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্য ১৮৯২
গোড়ায় গলদ প্রহসন ১৮৯২
বিসর্জন নাটক ১৮৯১
প্রায়শ্চিত্ত নাটক ১৯০৯
রাজা নাটক ১৯১০
অচলায়তন নাটক ১৯১২
ডাকঘর নাটক ১৯১২
ফাল্গুনী নাটক ১৯১৬
বসন্ত গীতিনাট্য ১৯২৩
রক্তকরবী নাটক ১৯২৪
নটীর পূজা নৃত্যনাট্য ১৯২৬
পরিত্রাণ নাটক ১৯২৯
তপতী নাটক ১৯২৯
চণ্ডালিকা নৃত্যনাট্য ১৯৩৩
বাঁশরী নাটক ১৯৩৩
তাসের দেশ নৃত্যনাট্য ১৯৩৩
শ্রাবণগাথা নৃত্যনাট্য ১৯৩৪

→ রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত নাটক ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ (১৮৮১)।
→ রবীন্দ্রনাথ তাঁর নিজের লেখা ১৩টি নাটকে অভিনয় করেন ।
→ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাজী নজরুল ইসলামকে ‘বসন্ত’ গীতিনাট্যটি উৎসর্গ করেন ।

মডেল প্রশ্ন

১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ লিখুন ।

উত্তর : জন্ম ৭ মে, ১৮৬১ সাল (২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) ও মৃত্যু ৭ আগস্ট, ১৯৪১ সাল (২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)।

২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?

উত্তর : ১৯১৩ সালে ।

৩. শান্তিনিকেতন কত সালে এবং কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর : ১৯০১ সালে; বোলপুরে ।

৪. ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থ রবীন্দ্রনাথ কার সহযোগিতায় অনুবাদ করেন?

উত্তর : W. B. Yeats-এর সহযোগিতায় অনুবাদ করেন ।

৫. রবীন্দ্রনাথের প্রথম কাব্যগ্রন্থ কোনটি? কত সালে কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

উত্তর : কবি কাহিনী; ১৮৭৮ সালে ‘ভারতী’ পত্রিকায় ।

৬. কত বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের প্রথম কাব্য বনফুল সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়?

উত্তর : ১৫ বছর বয়সে।

৭. রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত কবিতা কোনটি এবং কত সালে প্রকাশিত হয়?

উত্তর : হিন্দু মেলার উপহার; ১২৮১ বঙ্গাব্দে (১৮৭৪ সালে)।

৮. ভানুসিংহ ঠাকুর কার ছদ্মনাম?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম ।

৯. ‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’ কোন জাতীয় রচনা? রচয়িতা কে?

উত্তর : গীতিকাব্য সংকলন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১০. ব্রজবুলি ভাষায় রবীন্দ্রনাথ কোন কাব্যটি রচনা করেছেন?

উত্তর : ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী ।

১১. ভারত সরকার কত সালে রবীন্দ্রনাথকে ‘স্যার’ বা ‘নাইটহুড’ উপাধি দান করে?

উত্তর : ১৯১৫ সালের ৩ জুন ।

১২. রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতটি কার গানের সুরের অনুসরণে লিখেছিলেন?

উত্তর : গগন হরকরার সুরের অনুসরণে রচনা করেন ।

১৩. রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত পত্রিকাগুলোর নাম কি? কত সালে প্রথম প্রকাশিত হয়?

উত্তর : সাধনা, (১৮৯৪), ভারতী (১৮৯৮), বঙ্গদর্শন (১৯০১), তত্ত্ববোধিনী (১৯১১)।

১৪. কোন কবিতা প্রকাশিত হওয়ার পর বঙ্কিমচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে জয়মাল্য উপহার করেন?

উত্তর : সন্ধ্যাসঙ্গীত । এটি ১৮৮২ সালে প্রকাশিত হয় ।

১৫. ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের প্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ কোন গানটি রচনা করেন?

উত্তর : বাংলার মাটি বাংলার জল ।

১৬. রবীন্দ্রনাথকে কত সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে?

উত্তর : ১৯৪০ সালে।

১৭. রবীন্দ্রনাথের মা ও বাবার নাম কি?

উত্তর : মা সারদা দেবী ও বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৮. রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন ছড়াটিকে শৈশবের মেঘদূত’ নামে অভিহিত করেছেন?

উত্তর : বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এল বান ।

১৯. রবীন্দ্রনাথের মতে, তাঁর জীবনে কোনটি আদি কবির প্রথম কবিতা?

উত্তর : বিদ্যাসাগরের ‘জল পড়ে পাতা নড়ে।

২০. রাশিয়ার সাহিত্যিক ও গবেষক রবীন্দ্রনাথকে কার সঙ্গে তুলনা করেছেন?

উত্তর : লিও তলস্তয় ।

২১. ঠাকুর পরিবারের আসল পদবি কি ছিল?

উত্তর : কুশারী

২২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কে ‘গুরুদেব’ সম্মানে ভূষিত করেন?

উত্তর : মহাত্মা গান্ধী ।

২৩. রবীন্দ্রনাথকে প্রথম কে ‘বিশ্বকবি’ বলে সম্মানিত করেন?

উত্তর : ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় ।

২৪. ‘কবিগুরু’ তোমার প্রতি চাহিয়া আমাদের বিস্ময়ের সীমা নেই’।— এটি কার উক্তি?

উত্তর : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

২৫. এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ মরণে তাই তুমি করে গেলে দান।— উক্তিটি কার? কার উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছিলেন?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথের । চিত্তরঞ্জন দাসের উদ্দেশ্যে।

২৬. ‘আমি মুগ্ধ হয়েছি তোমার কবিতা শুনে । তুমি যে বিশ্ব বিখ্যাত কবি হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই’।— কার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ এ উক্তি করেছিলেন?

উত্তর : কবি কাজী নজরুল ইসলামের উদ্দেশ্যে ।

২৭. ‘ভাষার প্রাঙ্গণে তব, আমি কবি তোমারি অতিথি’। কার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ এ উক্তি করেছিলেন?

উত্তর : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের।

২৮. রবীন্দ্রনাথ কাকে বলেছিলেন, আমাদের সাহিত্য জগৎ চায় আপনার অনশন ভঙ্গ হোক’ ।

উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামকে ।

২৯. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কখন এবং কে ‘ভারতের মহাকবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন?

উত্তর : বেইজিং-এ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী উপলক্ষে চীনা কবি চি-সি-লিজন রবীন্দ্রনাথকে ‘ভারতের মহাকবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।

৩০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কত সালে এবং কিভাবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে?

উত্তর : ১৯৪০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিনিকেতনে একটি বিশেষ সমাবর্তনের আয়োজন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি প্রদান করে ।

৩১. রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন কবিতায় হরিপদ কেরানির প্রসঙ্গ এনেছেন?

উত্তর : বাঁশী ।

৩২. রবীন্দ্রনাথ লন্ডনের টিউব-রেলে বেড়ানোর সময় কোন কাব্যগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি হারিয়েছিলেন?

উত্তর : ইংরেজি গীতাঞ্জলির পাণ্ডুলিপি ।

৩৩. রবীন্দ্রনাথের শেষ কবিতাটি তিনি কাকে দিয়ে লিখিয়েছিলেন?

উত্তর : শ্রীমতি রাণীচন্দ ।

৩৪. কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথ ‘প্রশ্ন’ কবিতাটি লিখেছিলেন?

উত্তর : ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে হিজলী জেলে বন্দীদের ওপর ব্রিটিশদের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে ।

৩৫. রবীন্দ্রনাথ কোন কবিতাটি ইংরেজিতে লিখে বাংলায় অনুবাদ করেন?

উত্তর : দ্যা চাইল্ড।

৩৬. রবীন্দ্রনাথ কোন গ্রন্থটি নামকরণ করে যেতে পারেননি?

উত্তর : শেষ লেখা ।

৩৭. জালিয়ানওয়ালাবাগের যে ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ তাঁর নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন তাঁর বর্ণনা কোন কাব্যগ্রন্থে পাওয়া যায়?

উত্তর : ‘নৈবেদ্য’ কাব্যগ্ৰন্থ ।

৩৮. কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবে রবীন্দ্রনাথকে ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে?

উত্তর : ২৬ ডিসেম্বর, ১৯১৩ সালে।

৩৯. রবীন্দ্রনাথ কোন কবিতাটিকে তাঁর সমস্ত কাব্যের ভূমিকা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন?

উত্তর : নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ ।

৪০. ‘সোনার তরী’ কাব্যের ‘সুপ্তোত্থিতা’ কবিতার সঙ্গে কোন গ্রন্থের কোন গল্পের মিল লক্ষণীয়?

উত্তর : ঠাকুরমার ঝুলির ‘ঘুমন্তপুরী’ গল্পের।

৪১. রবীন্দ্রনাথের ‘বলাকা’ কাব্যের মূল সুর কি?

উত্তর : গতিবাদ ।

৪২. রবীন্দ্রনাথের ‘সঞ্চয়িতা’ কাব্যগ্রন্থে তাঁর কটি কাব্যের কবিতা স্থান পেয়েছে?

উত্তর : ২৭টি।

৪৩. রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন কাব্য সম্পর্কে বলেছেন, ‘কবির সঙ্গে যেন একজন শিল্পী এসে যোগ দিলেন?

উত্তর : মানসী ।

৪৪. রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন কাব্যকে সাহিত্যের একটা অনধিকার প্রবেশের দৃষ্টান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন?

উত্তর : ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলীকে।

৪৫. রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে শোকার্ত নজরুল কোন কবিতাটি লিখেছিলেন?

উত্তর : রবি-হারা ।

৪৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নৃত্যনাট্যগুলোর নাম করুন ।

উত্তর : নটীর পূজা (১৯২৬), চিত্রাঙ্গদা (১৯৯২) চণ্ডালিকা (১৯৩৩) ও শ্যামা (১৯৩৯)।

৪৮. রবীন্দ্রনাথ কোন গ্রন্থটি কাজী নজরুল ইসলামের নামে উৎসর্গ করেন?

উত্তর : ‘বসন্ত’ গীতিনাট্য ।

৪৯. রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক কোন নাট্যকার রবীন্দ্রনাথকে ব্যঙ্গ করে নাটক লিখেছিলেন? নাটকের নাম কি?

উত্তর : ডি এল রায় । আনন্দ বিদায় ।

৫০. রবীন্দ্রনাথের ‘অরূপ রতন’ নাটকটি কোন নাটকের সংক্ষিপ্ত রূপ?

উত্তর : রাজা ।

৫১. ‘রক্তকরবী’ নাটকের মূল নামকরণ কি ছিল?

উত্তর : নন্দিনী ।

৫২. রবীন্দ্রনাথ কোন গদ্য নাটকটি শরৎচন্দ্রকে উৎসর্গ করেছেন?

উত্তর : কালের যাত্রা ।

৫৩. ‘বাল্মীকি প্রতিভা’, ‘বিসর্জন’ ও ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাট্যত্রয় কে রচনা করেছেন?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৫৪. ‘ডাকঘর’ ও ‘তাসের দেশ’ রবীন্দ্রনাথের কোন ধরনের রচনা?

উত্তর : সাঙ্কেতিক নাটক ।

৫৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম সার্থক উপন্যাস কোনটি?

উত্তর : বৌঠাকুরাণীর হাট।

৫৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুটি ঐতিহাসিক উপন্যাসের নাম লিখুন ।

উত্তর : বৌ ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩) ও রাজর্ষি (১৮৮৩)।

৫৭. রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি সামাজিক উপন্যাসের নাম লিখুন ।

উত্তর : চোখের বালি (১৯০৩), নৌকাডুবি (১৯০৬) ও দুই বোন (১৯৩৩) ।

৫৮. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যধর্মী উপন্যাস কোনটি?

উত্তর : শেষের কবিতা (১৯২৯)।

৫৯. রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক উপন্যাস কোনটি?

উত্তর : ঘরে-বাইরে (১৯১৬)।

৬০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ প্রদত্ত ‘নাইট’ উপাধি বর্জন করেন?

উত্তর : ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ।

৬১. রবীন্দ্রনাথের কোন উপন্যাসটি হিন্দিতে প্রথম অনূদিত হয়?

উত্তর : রাজর্ষি ।

৬২. রবীন্দ্রনাথের কোন উপন্যাস ‘এপিকধর্মী উপন্যাস’ হিসেবে খ্যাত?

উত্তর : গোরা ।

৬৩. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখিত মোট উপন্যাসের সংখ্যা কত?

উত্তর : ১২টি ।

৬৪. বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসের তুল্য রবীন্দ্রনাথের কোন উপন্যাস?

উত্তর : চোখের বালি ।

৬৫. ব্রিটিশ সরকারের কারাগারে বন্দীদের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ কোন উপন্যাসটি উপহার দেন?

উত্তর : চার অধ্যায় ।

৬৬. কোন গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞানের প্রতি অপরিসীম আগ্রহের কথা বলেছেন?

উত্তর : বিশ্বপরিচয় (১৯৩৭)।

৬৭. ‘সভ্যতার সংকট’ প্রবন্ধটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে পাঠ করেন?

উত্তর : ১৯৪১ সালে তাঁর নিজের জন্মদিনে।

৬৮. রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক প্রবন্ধগ্রন্থের নাম কি?

উত্তর : কালান্তর ।

৬৯. স্বদেশ কি? এর রচয়িতা কে?

উত্তর : প্রবন্ধ গ্রন্থ । বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

৭০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অতিপ্রাকৃত গল্পসমূহের নাম লিখুন ।

উত্তর : অতিপ্রাকৃত শব্দের অর্থ অলৌকিক, অনৈসর্গিক, Supernatural। তার অতিপ্রাকৃত গল্পগুলো হলো— ‘গুপ্তধন’, ‘জীবিত ও মৃত’, ‘মণিহারা’, ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘নিশীথে’, ‘সম্পত্তি সমৰ্পণ’ প্রভৃতি ।

৭১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান কোন কোন দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে?

উত্তর : বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত-এর রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর রচিত ‘জনগণমন’ গানটিকে ভারত সরকার জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করে। অন্যদিকে ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। এ গান রাষ্ট্রীয় উপলক্ষসমূহে বিধি অনুসারে গাওয়া হয় বা এর সঙ্গীত বাজানো হয় ।

৭২. ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ কবিতাটি কবে, কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

উত্তর : বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমর সোনার বাংলা’ ১৯০৫ সালে (১৩১২ বঙ্গাব্দ) একটি কবিতা হিসেবে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ।

৭৩. ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ কবিতাটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয় কত সালে?

উত্তর : ২৫ চরণের এ কবিতাটির প্রথম ১০ চরণ ৩ মার্চ ১৯৭১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয় ।

৭৪. ‘জীবনস্মৃতি’ কার আত্মজীবনী?

উত্তর : ‘জীবনস্মৃতি’ (১৯১২) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী। এখানে রবীন্দ্রনাথের বাল্যকাল থেকে পঁচিশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কার কাহিনী ও ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। ছোট ছোট ঘটনা, চিত্র, স্বভাবের বিকাশ, অভিজ্ঞতার সঞ্চয় কিভাবে ঘটেছে তার সহজ সুন্দর আখ্যান এতে বর্ণিত আত্মজীবনী রচনার প্রচলিত রীতি ভেঙে রবীন্দ্রনাথ এ গ্রন্থে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছেন।

৭৫. ‘শেষের কবিতা’ কোন ধরনের রচনা?

উত্তর : ‘শেষের কবিতা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যধর্মী উপন্যাস। এটি ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় ছাপা হয়। ভাষার অসামান্য ঔজ্জ্বল্য, দৃপ্তশক্তি ও কবিতার দীপ্তি এ উপন্যাসটিকে এমন স্বাতন্ত্র্য এনে দিয়েছে, যার জন্য এ গ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথের বিস্ময়কর সৃষ্টির অন্যতম। অমিত, লাবণ্য, কেতকী, শোভনলাল প্রমুখ এ উপন্যাসের চরিত্র। উপন্যাসটির কতিপয় বাক্য আজ প্রবাদের মর্যাদা পেয়েছে। যেমন— ‘ফ্যাশনটা হলো মুখোশ, স্টাইলটা হলো মুখশ্রী’। ‘কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও’ এ কবিতাটি দিয়ে উপন্যাসটি শেষ হয়েছে।

৭৬. ‘রক্তকরবী’ নাটকটি কোন ধরনের রচনা?

উত্তর : রক্তকরবী’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। এটি তার একটি সাংকেতিক নাটক। মানুষের সমস্ত লোভ কিভাবে জীবনের সমস্ত সৌন্দর্য ও স্বাভাবিকতাকে অস্বীকার করে মানুষকে নিছক যন্ত্রে ও উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপকরণে পরিণত করে এবং তার বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ কিরূপ আকার ধারণ করে তারই রূপায়ণ এ নাটক। এ নাটকে ধনের ওপর ধান্যের, শক্তির ওপর প্রেমের এবং মৃত্যুর ওপর জীবনের জয়গান গাওয়া হয়েছে ।

৭৭. রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পগুলো কাব্যধর্মী। রবীন্দ্র গল্পের বিষয়বৈচিত্র্য অসাধারণ। প্রেম ও প্রকৃতি তার গল্পের মূল উপাদান। তিনি গল্প সরাসরি আরম্ভ করেন এবং মুহূর্তের মধ্যে পাঠকের মনকে ঘটনাস্রোতে মগ্ন করেন। ঠিক মুখে বলা গল্পের মত সহজ স্বচ্ছন্দ স্রোতে বয়ে চলে তার কাহিনী।

৭৮. রবীন্দ্রনাথের নাটকগুলোকে কোন কোন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়? তার ২টি সাংকেতিক নাটকের নাম লিখুন।

উত্তর : রবীন্দ্রনাথের নাটকের শ্রেণীগুলো হচ্ছে— গীতিনাট্য, কাব্যনাট্য, সাংকেতিক নাটক, সামাজিক নাটক, প্রহসন, নৃত্যনাট্য ইত্যাদি । দুটি সাংকেতিক নাটক— ডাকঘর, রাজা ।

৭৯. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কখন এবং কেন নাইট উপাধি বর্জন করেছিলেন?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল নাইট উপাধি বর্জন করেন। কারণ এ দিনে রাউলাট অ্যাক্ট-এর বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে এক জনসমাবেশে ভারতীয়দের ওপর ব্রিটিশ পুলিশ আকস্মিকভাবে গুলি চালিয়ে অসহায় ব্যক্তিদের হত্যা করে। ইংরেজদের এ অত্যাচারী মূর্তি দেখে রবীন্দ্রনাথ ভাইসরয়কে এক পত্র লিখে ‘নাইট’ উপাধি ফিরিয়ে দেন। উল্লেখ্য, তিনি ১৯১৫ সালে নাইট উপাধি পান ।

৮০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে যা জানেন লিখুন ।

উত্তর : বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা । তিনি ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, গায়ক, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ। তিনি জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার জোড়াসাঁকোর সম্ভ্রান্ত ঠাকুর পরিবারে ১৮৬১ সালের ৭ মে (২৫ বৈশাখ ১২৬৮)। মূলত কবি হিসেবে তাঁর প্রতিভা বিশ্বময় স্বীকৃত। ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এশিয়ার বিদগ্ধ ও বরেণ্য ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই প্রথম এ পুরস্কার জয়ের গৌরব অর্জন করেন। তাঁর আশি বছরের দীর্ঘ জীবনে রচনার মধ্যে রয়েছে অসংখ্য কবিতা, গান, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতিনাট্য, নৃত্যনাট্য, ভ্রমণকাহিনী, চিঠিপত্র এবং দেশে বিদেশে প্রদত্ত বক্তৃতামালা। তিনি তাঁর দীর্ঘজীবনে নানাভাবে আমন্ত্রিত হয়ে এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বহু দেশ সফর করেন। সেসব দেশে তিনি কেবল কবি হিসেবেই নন, বরং বিশ্বের অন্যতম মানবতাবাদী দার্শনিক হিসেবে স্বীকৃত হন। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮) এই মহামনীষী মৃত্যুবরণ করেন ।

৮১. ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলীর ছয়টি লাইন লিখুন ।

উত্তর :

আজি এ প্রভাতে রবির কর
কেমনে পশিল প্রাণের পর
কেমনে পশিল গুহার আঁধারে প্রভাতপাখির গান!
না জানি কেন রে এত দিন পরে জাগিয়া উঠিল প্রাণ
জাগিয়া উঠেছে প্রাণ
ওরে উথলি উঠেছে বারি,
ওরে প্রাণের বেদনা প্রাণের আবেগ রুধিয়া রাখিতে নারি ।

৮২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?

উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ‘গীতাঞ্জলি’ ও আরো কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ থেকে বাছাই করা কবিতার অনুবাদ সংগ্রথিত করে ‘Song Offerings’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। আর এ গ্রন্থটির জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button