আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
লেখক পরিচিতি

মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪ – ১৮৭৩)

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যে কয়জন প্রতিভাধরের অবদান অবিস্মরণীয় তাদের মধ্যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত অন্যতম। বাংলা কবিতাকে তিনি নবজন্ম দিয়েছিলেন এবং মুক্ত করেছিলেন মধ্যযুগের নাগপাশ থেকে তিনিই প্রথম বাংলা ভাষায় মহাকাব্য রচনা করেন এবং বাংলা কবিতায় সনেট প্রবর্তন করেন।

জন্ম ২৪ জানুয়ারি, ১৮২৪।
পিতা রাজনারায়ণ দত্ত।
মাতা জাহ্নবী দেবী।
জন্মস্থান সাগরদাঁড়ি, কেশবপুর, যশোর।
ধর্মান্তরিত হন ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৮৪৩।
প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ The Captive Lady. ১৮৪৯ সাল।
ছদ্মনাম Timothy Penpoem.
প্রথম নাটক শর্মিষ্ঠা, ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত।
অমিত্রাক্ষর ছন্দের সর্বপ্রথম প্রয়োগ ‘পদ্মাবতী’ নাটকে। তবে সফল প্রয়োগ ঘটান ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্যে।
মাদ্রাজ বাস ১৮৪৮-১৮৫৬ সালে।
প্রথম স্ত্রী রেবেকা টমসন; ১৮৪৮ সালে বিয়ে করেন।
বিবাহ বিচ্ছেদ ১৮৫৫ সালে।
দ্বিতীয় স্ত্রী অধ্যাপক কন্যা আরিয়েতা (হেনরিয়েটা); ১৮৫৬ সালে বিয়ে করেন।
কলকাতায় প্রত্যাবর্তন ২ ফেব্রুয়ারি, ১৮৫৬।
বাংলা ভাষার সর্বপ্রথম সার্থক ট্রাজেডি নাটক কৃষ্ণকুমারী।
ইউরোপ গমন ১৮৬২ সালে।
ইউরোপ বাস ১৮৬২-১৮৬৬ সালে।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ৫ জানুয়ারি, ১৮৬৭।
জীবনাবসান ২৯ জুন, ১৮৭৩ সালে।

মধুসূদন রচনাবলী :

নাটক : শর্মিষ্ঠা (১৮৫৮), পদ্মাবতী (১৮৬০), কৃষ্ণকুমারী (১৮৬১), হেক্টর বধ (১৮৭১), মায়াকানন (১৮৭৩), বিষ না ধনুগুণ (১৮৭৩)।

প্রহসন : একেই কি বলে সভ্যতা (১৮৫৯), বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ (১৮৫৯)।

– পাইকপাড়ার প্রজাদের অনুরোধে প্রহসন দুটি রচনা করেন।
– ‘বিষ না ধনুগুণ’ অসম্পূর্ণ নাটক ।
– নাটকে যথেষ্ট পারদর্শিতা প্রদর্শনের জন্য মধুসূদন দত্তকে ‘আধুনিক বাংলা নাটকের জনক’ বলা হয়।
– ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে বসে রচনা করেন।
– পত্রকাব্য হলো ‘বীরাঙ্গনা’।

কাব্যগ্রন্থ : তিলোত্তমাসম্ভব (১৮৬০), মেঘনাদবধ (১৮৬১), ব্রজাঙ্গনা (১৮৬১), বীরাঙ্গনা (১৮৬২), চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৮৬৬)

ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ : Visions of the Past (১৮৪৮), The Captive Lady (১৮৪৯)

– এছাড়াও খণ্ডকাব্য Rizia
– ১৮৬১ সালে মধুসূদন দত্ত দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেন।

জীবনাবসান : ২৯ জুন ১৮৭৩।

আরো পড়ুন

মডেল প্রশ্ন

১. বাংলা সাহিত্যে সার্থক মহাকবি কে?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।

২. মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ লিখুন।

উত্তর : জন্ম ২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ ও মৃত্যু ২৯ জুন ১৮৭৩।

৩. মধুসূদন দত্তের প্রথম প্রকাশিত কাব্য কোনটি? কত সালে প্রকাশিত?

উত্তর : The Captive Lady; ১৮৪৯ সালে প্রকাশিত।

8. Visions of the Past ও The Captive Lady কাব্য দুটির রচয়িতা কে?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।

৫. মধুসূদন সর্বপ্রথম তার কোন কাব্যগ্রন্থে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তন করেন?

উত্তর : চতুর্দশপদী কবিতাবলী ।

৬. ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’ কে রচনা করেন? কোন শ্রেণীর কাব্য?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত । পত্রকাব্য ।

৭. ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’টি কার কাব্যগ্রন্থ অনুসরণে লেখা? কতটি পত্র আছে?

উত্তর : ইটালির কবি ওভিদের Heroides কাব্যগ্রন্থেরর অনুসরণে লেখা। কাব্যটির পত্র সংখ্যা ১১টি।

৮. সনেট কি? বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক কে?

উত্তর : যে কবিতায় কবি হৃদয়ের একটিমাত্র ভাব বা অনুভূতি অখণ্ড থেকে চতুর্দশ অক্ষর ও চতুর্দশ চরণ দ্বারা একটি বিশেষ পদের মধ্য দিয়ে কবিতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ লাভ করে তাকে চতুর্দশপদী কবিতা বা সনেট বলে। বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে বাংলায় সনেট রচনা শুরু করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং তার হাতেই এসেছে সনেট রচনার যুগান্তর সাফল্য। এ কারণেই তাকে বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক বলা হয়।

৯. একটি সনেটের ক’টি অংশ? বিশ্লেষণ করুন।

উত্তর : সনেটে যেমন চৌদ্দটি লাইন বা পক্তি থাকে তেমনি আবার প্রতিটি লাইন বা পঙ্ক্তিতে চৌদ্দটি বা আঠারোটি অক্ষর থাকে। সাধারণভাবে কবিতার চৌদ্দটি লাইন দুটি ভাগে বিভক্ত থাকে। প্রথম ভাগে আট লাইন এবং দ্বিতীয় ভাগে ছয় লাইন। প্রথম ভাগকে ‘অষ্টক’ এবং দ্বিতীয় ভাগকে ‘ঘটক’ বা ‘ষষ্টক’ নামে অভিহিত করা হয়। পরবর্তীতে এ ভাগ অন্যরকম হতেও দেখা যায়। তিনটি চার লাইনের ভাগ; প্রতিটি ‘চতুঙ্ক’ নামে পরিচিত এবং শেষ দুটি অন্ত্যমিলবিশিষ্ট চরণ।

১০. মধুসূদনের সনেট জাতীয় রচনা কোনটি? কত সালে প্রকাশিত?

উত্তর : ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’; ১৮৬৫ সালে প্রকাশিত।

১১. ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ কাব্যে কয়টি কবিতার সন্নিবেশ ঘটেছে?

উত্তর : ১০২টি কবিতা ।

১২. মধুসূদনের প্রথম সনেট কোনটি?

উত্তর : বঙ্গভাষা ।

১৩. ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন তা সবে অবোধ আমি অবহেলা করি’—পতিটি কোন কবিতার? রচয়িতা কে?

উত্তর : বঙ্গভাষা; মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।

১৪. বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মহাকাব্য কোনটি? এটি কোন ছন্দে রচিত?

উত্তর : মেঘনাদবধ মহাকাব্য, অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত।

১৫. অমিত্রাক্ষর ছন্দের স্রষ্টা মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম কাব্য কোনটি?

উত্তর : ‘তিলোত্তমা সম্ভব’ । এটি ১৮৬০ সালে প্রকাশিত ।

১৬. কোন কাব্য লিখে মাইকেল প্রথম বাঙালি কবি সংবর্ধনা পান এবং কার দ্বারা?

উত্তর : ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যটি লেখার দুসপ্তাহের মধ্যে কালীপ্রসন্ন সিংহ ‘বিদ্যোৎসাহিনী সভার পক্ষ থেকে কবিকে সংবর্ধিত করেন।

১৭. মধুসূদনের প্রথম নাটক কোনটি? কত সালে প্রকাশিত হয়?

উত্তর : শর্মিষ্ঠা। ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়।

১৮. বাংলা সাহিত্যের প্রথম ট্র্যাজেডি কোনটি? কত সালে প্রকাশিত হয়?

উত্তর : কৃষ্ণকুমারী। ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হয়।

১৯. ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ গ্রন্থদ্বয়ের রচয়িতা কে? কোন শ্রেণীর রচনা?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত; প্রহসন ।

২০. মধুসূদন দত্ত সর্বপ্রথম কোন নাটকে আমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রয়োগ করেন?

উত্তর : ‘পদ্মাবতী’ নাটকে।

২১. মধুসূদন দত্তের কয়েকটি নাটকের নাম উল্লেখ করুন ।

উত্তর : শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী, মায়াকানন, পদ্মাবতী।

২২. বাংলা কাব্যসাহিত্যে আধুনিকতার জনক কে? এ ক্ষেত্রে তাকে কেন জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-৭৩) বাংলা কাব্যসাহিত্যে আধুনিকতার জনক। মধ্যযুগের কাব্যে দেবদেবীর মাহাত্ম্যসূচক কাহিনীর বৈশিষ্ট্য অতিক্রম করে বাংলা কাব্যধারায় মানবতাবোধ সৃষ্টিপূর্বক আধুনিকতার লক্ষণ ফোটানোতেই মাইকেল মধুসূদন দত্তের অতুলনীয় “কীর্তি প্রকাশিত। তিনি তার সাহিত্যসৃষ্টিতে, বিষয়নির্বাচনে ও প্রকাশভঙ্গিতে, ভাবে ও ভাষায়, অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যে এমন একটি আশ্চর্য শিল্পকুশলতা ফুটিয়ে তুলেছেন যাকে বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে অভিনব বলে চিহ্নিত করা যায়,

২৩. প্রহসন বলতে কি বোঝায়? কতিপয় উদাহরণ দিন।

উত্তর : প্রহসন বলতে সংস্কৃত আলঙ্কারিকরা সমাজের কুরীতি শোধনার্থে রহস্যজনক ঘটনা সম্বলিত হাস্যরসপ্রধান একাঙ্কিকা নাটককে বোঝাতেন। এতে হাস্যরসময় জীবনালেখ্যই রূপায়িত হয়। বর্তমানকালে প্রহসনকে সংজ্ঞায়িত করা হয় অতিমাত্রায় লঘু কল্পনাময়, আতিশয্যব্যঞ্জক, হাস্যরসোজ্জ্বল সংস্কারমূলক ব্যাঙ্গাত্মক নাটক হিসেবে। অর্থাৎ এককথায় প্রহসন হলো সমাজের ত্রুটি নির্দেশক ব্যাঙ্গাত্মক নাটক। মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ (১৮৬০), ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ (১৮৬০), দীনবন্ধু মিত্রের ‘সধবার একাদশী’ (১৮৬৬), ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’ (১৮৬৬), ‘জামাই বারিক’ (১৯২৯); গিরিশচন্দ্র ঘোষের ‘বড় দিনের বকশিস’ (১৮৯৪); মীর মশাররফ হোসেনের ‘এর উপায় কি? (১৮৭৬), ‘ভাই ভাই এইতো চাই’ (১৮৯৯), ‘ফাঁস কাগজ’ (১৮৯৯) প্রভৃতি বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য প্রহসন।

২৪. ‘মেঘনাদবধ’ মহাকাব্যের রচয়িতা কে? এ মহাকাব্য সম্পর্কে আপনি আর কি জানেন?

উত্তর : ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের রচয়িতা মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ‘মেঘনাদবধ’ মহাকাব্যের কাহিনী সংস্কৃত মহাকাব্য রামায়ণ থেকে গৃহীত হয়েছে। রাবণ, মেঘনাদ, লক্ষ্মণ, রাম, প্রমীলা, বিভীষণ, সীতা এ মহাকাব্যের প্রধান চরিত্র। বাংলা সাহিত্যের একমাত্র সার্থক এ মহাকাব্য ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হয় ।

২৫. মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসনদ্বয়ের পরিচয় দিন।

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত প্রহসন ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ (১৮৫৯), ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ (১৮৫৯)। ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ প্রহসনে তৎকালীন নব্যবঙ্গীয় সম্প্রদায়ের সুরা পান এবং ইংরেজ অনুকরণের প্রতি ব্যঙ্গ করা হয়েছে।

২৬. বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্র্যাজেডি নাটকের পরিচয় দিন।

উত্তর : বাংলা সাহিত্যের প্রথম এবং সার্থক ট্র্যাজেডি নাটক হলো মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘কৃষ্ণকুমারী’। নাটকটি ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়, ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় এবং ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘শোভাবাজার থিয়েটার’-এ প্রথম অভিনীত হয়। উল্লেখ্য, কৃষ্ণকুমারী তার সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নাটক।

২৭. ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্যটি কার রচিত?

উত্তর : মহাভারতের সুন্দ ও উপসুন্দ কাহিনী অবলম্বন করে মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত কাহিনীর নাম ‘তিলোত্তমা সম্ভব’ (১৮৬০) কাব্য। এটি তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ এবং বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ।

২৮. অমিত্রাক্ষর ছন্দ বলতে কোন ধরনের ছন্দকে বোঝায়? এর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।

উত্তর : ‘অমিত্রাক্ষর ছন্দ’ হলো অন্ত্যমিলনহীন এবং যতির বাধাধরা নিয়ম লঙ্ঘনকারী ছন্দবিশেষ। এর ইংরেজি পরিভাষা Blank verse। অমিত্রাক্ষর ছন্দে ভাবের প্রবহমানতা নেই এবং ১৪ মাত্রার চরণ থাকে এবং চরণ শেষে অন্ত্যমিল থাকে না। উল্লেখ্য, কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তকে (১৮২৪- ১৮৭৩ খ্রি) বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের সার্থক প্রবর্তক বলা হয়। তার ‘মেঘনাদবধ’ ও ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যের আদ্যোপান্ত অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত।

২৯. মাইকেল মধুসূদন দত্তের দেশপ্রেমের প্রবল প্রকাশ ঘটেছে সাহিত্যের কোন ক্ষেত্রে?

উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রবল দেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটেছে সনেটে। এর বাংলা অর্থ ‘চতুর্দশপদী কবিতা’। এর প্রতি পংক্তিতে চৌদ্দ বা আঠার অক্ষরযুক্ত চৌদ্দ পংক্তির নির্দিষ্ট কলেবরে কবি হৃদয়ের দেশপ্রেম প্রবলরূপে এক বিশিষ্ট ছন্দরীতিতে রূপায়িত হয়ে উঠেছে। তিনিই বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক।

৩০. মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ’ কি ধরনের রচনা?

উত্তর : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত সিপাহি বিপ্লবের স্বাধীনতামন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মাইকেল মধুসূদন রাবণকে নায়ক ও ব্রামকে খলনায়ক করে রচনা করেন মহাকাব্য ‘মেঘনাদবধ’। এটি একটি স্বাধীনতাভিলাষী কাৰ্য। সংস্কৃত মহাকাব্য ‘রামায়ণ’-এর ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ কাহিনী অবলম্বনে ‘মেঘনাদবধ’ মহাকাব্য রচিত।

৩১. বাংলা সাহিত্যে মধুসূদন কোন কোন শিল্পাঙ্গিক নিয়ে কাজ করেছেন? এগুলোর একটি প্রসঙ্গে লিখুন।

উত্তর : বাংলা সাহিত্যে মধুসূদন কাজ করেছেন- মহাকাব্য, কাব্য, নাটক, প্রহসন, পত্রকাব্য, গীতিকাব্য, চতুর্দশপদী কবিতা ইত্যাদি শিল্পাঙ্গিক নিয়ে ।

চতুর্দশপদী কবিতা : ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামে সনেট জাতীয় কবিতা রচনার মাধ্যমে মধুসূদন বাংলা কাব্যে একটি নতুন শাখার সৃষ্টি করেন। একটি সনেটে ১৪টি পড়ক্তি থাকে, প্রথম ৮টিকে বলা হয় অষ্টক এবং শেষ ৬টিকে বলা হয় ঘটক্। একটি সনেট একটি মাত্র ভাবের বাহন। মাইকেল মধুসূদন মোট ১০২টি সনেট রচনা করেন, যা ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ গ্রন্থে প্রকাশিত হয়।

৩২. মাইকেল মধুসূদনের ৫টি শিল্পাঙ্গিকের ১টি করে উদাহরণ দিন।

উত্তর :

১. নাটক— পদ্মাবতী;
২. মহাকাব্য মেঘনাদবধ;
৩. সনেট— চতুর্দশপদী কবিতাবলী,;
৪. প্রহসন— একেই কি বলে সভ্যতা;
৫. পত্রকাব্য — বীরাঙ্গনা কাব্য ।

৩৪. বাংলা কবিতার ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?

উত্তর : বাংলা কবিতার ছন্দ তিন প্রকার। যথা : ১. অক্ষরবৃত্ত, ২. মাত্রাবৃত্ত, ৩. স্বরবৃত্ত ।

১. অক্ষরবৃত্ত ছন্দ : যে ছন্দের পর্বে শব্দের আদি ও মধ্যবর্তী যুগধ্বনি সংকুচিত ও একমাত্রার এবং শব্দের অন্তঃস্থিত যুগ্মধ্বনি সম্প্রসারিত ও দুইমাত্রা হয় তাকে অক্ষরবৃত্ত ছন্দ বলে। এ ছন্দের মূলপর্ব আট বা দশ মাত্রার হয় । এই ছন্দ সুর প্রধান।

২. মাত্রাবৃত্ত ছন্দ : যে ছন্দে যুগাধ্বনি সর্বদা বিশ্লিষ্ট ভঙ্গিতে উচ্চারিত হয়ে দু’মাত্রার মর্যাদা পায় এবং অযুগাধ্বনি একমাত্রার বলে গণনা করা হয় তাকে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ বলে। মাত্রাবৃত্ত ছন্দ ধ্বনি-প্রধান। এ ছন্দে ছয় মাত্রার পর্বই অধিক। চার, পাঁচ, সাত, আট মাত্রার পর্বও এ ছন্দে পাওয়া যায়।

৩. স্বরবৃত্ত ছন্দ : স্বরধ্বনির সংখ্যার উপর পর্বের মাত্রা-সংখ্যা নির্ভরশীল যে ছন্দের, তার নাম” স্বরবৃত্ত ছন্দ। এ ছন্দে সাধারণত প্রতি পর্বে চারটি অক্ষর থাকে। এর লয় হবে দ্রুত।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button