আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
টুকরো সংবাদ

বৈশ্বিক বিনিয়ােগে বাংলাদেশ

বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়ােগের সুযােগ উন্মুক্ত করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে ১৬ জানুয়ারি ২০২২ প্রথমবারের মতাে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ‘মূলধনি হিসাব লেনদেন (বিদেশে ইকুইটি বিনিয়ােগ) বিধিমালা, ২০২২’ জারি করে। তবে বিদেশে বিনিয়ােগের এ সুযােগ পাবে শুধু রপ্তানিকারকেরা।

কর্তৃপক্ষ

বিনিয়ােগে আগ্রহী যেকোনাে প্রতিষ্ঠান তাদের আগের পাঁচ বছরের গড় রপ্তানি আয়ের সর্বোচ্চ ২০% অথবা তার সর্বশেষ নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রদর্শিত নিট সম্পদের ২৫%; পর্যন্ত বিনিয়ােগ করতে পারবে। তবে বিনিয়ােগের ক্ষেত্রে আগে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে সভাপতি করে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি আবেদন যাচাই-বাছাই করবে। পরবর্তীতে এ কমিটি সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়ােগের অনুমতি দেবে।

বাছাই প্রক্রিয়া

বিনিয়ােগকারীকে প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়ােগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বরাবর আবেদন করতে হবে। এরপর সেই আবেদন পর্যালােচনা করে একটি প্রতিবেদন পাঠানাে হবে বাছাই কমিটিতে। এ ক্ষেত্রে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানটির বিদেশে বিনিয়ােগের অর্থের পরিমাণ, বিনিয়ােগের ক্ষেত্র, বৈদেশিক খাতের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট, বিনিয়ােগ প্রস্তাবিত দেশের আইন ও ঝুঁকি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেবে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়ােগ বিভাগ। এরপর বাছাই কমিটি আবেদনকারীর বিদেশে বিনিয়ােগ প্রস্তাব পর্যালােচনা করে বিনিয়ােগের সীমাহাস-বৃদ্ধি কিংবা পুনর্বিনিয়ােগের সুপারিশ করবে।

আরো পড়ুন

আবেদনের শর্ত

আবেদনের ক্ষেত্রে বিদেশে বিনিয়ােগ প্রস্তাবকারী কোম্পানির শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর পরিশােধের সনদ এবং বিনিয়ােগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের সম্মতি লাগবে। ঋণখেলাপি বা অসমন্বিত পুনর্গঠিত বড় ঋণ নেওয়া কোনাে প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে না। আবেদনকারীকে বিনিয়ােগকৃত দেশে নিবন্ধিত, প্রতিষ্ঠিত বা অধিগ্রহণ ও করতে যাওয়া প্রস্তাবিত কোম্পানির সম্পূর্ণ মালিকানা অথবা পরিচালনা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম, এমন শেয়ারের মালিক হতে হবে। অনুমােদিত ডিলার ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। বিনিয়ােগের অর্থ বিনিয়ােগকারী দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংকের মাধ্যমে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে পাঠাতে হবে। এছাড়া কর্মী নিয়ােগের ক্ষেত্রে ঐ দেশের আইন মেনে সর্বোচ্চসংখ্যক বাংলাদেশিকে নিয়ােগ দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বাের্ড এবং সরকারের যেকোনাে প্রতিনিধি বিদেশে বিনিয়ােগের কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করতে পারবে।

বিনিয়ােগ করা যাবে

যেসব দেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের কাজ করার এবং অর্জিত অর্থ দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে কোনাে বাধা নেই, সেসব দেশে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বৈত কর পরিহার, দ্বিপক্ষীয় পুঁজি বিনিয়ােগ, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ চুক্তি রয়েছে, এমন দেশ।

বিনিয়ােগ করা যাবে না

যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। যেসব দেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, ইউরােপীয় ইউনিয়ন (EU), অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোলের নিষেধাজ্ঞা ই রয়েছে Financial Action Task Force (FATF) যেসব দেশের বিরুদ্ধে প্রতিব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশিত দেশসমূহে।

বিনিয়ােগে অনুমােদন

দেশ থেকে প্রথমবারের মতাে ২০১৩ সালে মিয়ানমারে একটি যৌথ মূলধনি কোম্পানিতে বিনিয়ােগের অনুমতি পায় মবিল যমুনা। সর্বমােট বৈধভাবে দেশের বাইরে বিনিয়ােগের অনুমােদন রয়েছে ২২টি কোম্পানির। সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় চার কোম্পানিকে পাঁচ দেশে বিনিয়ােগের অনুমতি দেওয়া হয় । প্রতিষ্ঠানগুলাে বিএসআরএম, রেনেটা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও কলম্বিয়া গার্মেন্টস। এর মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ফিলিপাইনে, কলম্বিয়া গার্মেন্টস ও বিএসআরএম হংকংয়ে, বিএসআরএম ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস কেনিয়াতে এবং রেনেটা যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে বিনিয়ােগ করতে পারবে।

FACT FILE

  • বিশ্ব বিনিয়ােগ প্রতিবেদন (WIR) প্রকাশ করে জাতিসংঘ, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন (UNCTAD)।
  • আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী বিদেশি কোম্পানিগুলাে তিনভাবে পুঁজি দেশে আনতে পারে। এগুলাে হচ্ছে- মূলধন হিসেবে নগদ বা শিল্পের যন্ত্রপাতি হিসেবে, দেশে ব্যবসা করে অর্জিত মুনাফা বিদেশে না নিয়ে দেশে বিনিয়ােগ করে এবং এক কোম্পানি অন্য কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়ােগ করতে পারে। এ তিন পদ্ধতির যে কোনােভাবে বিনিয়ােগ করলে তা সরাসরি বিদেশি বিনিয়ােগ (FD) হিসেবে গণ্য করা হয়।
  • ২০২০ সালে বিনিয়ােগ প্রাপ্তিতে শীর্ষ দেশ-যুক্তরাষ্ট্র (১৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
  • ২০২০ সালে বৈশ্বিক বিনিয়ােগে শীর্ষ দেশ- চীন (১৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
  • ২০২০ সালে বাংলাদেশে বিনিয়ােগ হয় ২,৫৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর বাংলাদেশ বিশ্বে বিনিয়ােগ করে ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button