আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং

বিভিন্ন প্রকার তহবিলের উৎসের ধারণা

যেকোনাে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান শুরু করার জন্য এবং দৈনন্দিন ব্যবসায় কার্য পরিচালনা করার জন্য যে তহবিলের প্রয়ােজন হয় তার উৎস নির্বাচন অর্থায়ন ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কেননা ভিন্ন ভিন্ন তহবিল উৎসের খরচও ভিন্ন এবং ভিন্ন মেয়াদভিত্তিক তহবিলের সুবিধা-অসুবিধাও আলাদা। বিভিন্ন উৎসের মধ্যে তুলনা করে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য তহবিলের উৎসের যে মিশ্রণটি সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদানকারী ও ন্যূনতম খরচযুক্ত, সেই মিশ্রণের উৎস থেকেই প্রতিষ্ঠান তহবিল সংগ্রহ করে।

তহবিল বিনিয়ােগের মূল উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন। উল্লেখ্য যে, কোনাে প্রতিষ্ঠানের মােট পরিচালন ব্যয়ের চেয়ে মােট বিক্রয় আয়ের পরিমাণ বেশি হলে সাধারণত মােট মুনাফা বুঝায়। মােট মুনাফা থেকে তহবিলের উৎস বাবদ খরচ বা ব্যয় ও কর বাদ দিলে নিট মুনাফা পাওয়া যায়। সুতরাং মুনাফার পরিমাণকে সর্বোচ্চকরণে তহবিল উৎসের খরচ ন্যূনতম হওয়া অত্যাবশ্যক।

ব্যবসায় অর্থায়ন বলতে ব্যবসায় করার জন্য যে তহবিলের প্রয়ােজন হয় তা সরবরাহ করাকে বুঝায়। জনাব রহমান একটি দর্জি দোকানের মালিক। ব্যবসায়ের শুরুতেই তিনি কিছু মেশিন ক্রয় করেন। ব্যবসায়ী সাধারণত তার নিজস্ব সঞ্চয় হতে মেশিন ক্রয়সংক্রান্ত স্থায়ী বিনিয়ােগের জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করে। কেননা এই অর্থ তিনি যেকোনাে মেয়াদে ব্যবহার করতে পারবেন।

কিন্তু তিনি যদি হিসাব করে দেখেন নিজস্ব সঞ্চয় মেশিন ক্রয়ের জন্য যথেষ্ট নয়, তবে তিনি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক যেমন: জনতা, রূপালী অথবা অন্যান্য ঋণ প্রদানকারী আর্থিক সংস্থা থেকে নির্দিষ্ট সুদের হারে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। এ ধরনের ঋণ তিনি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গ্রহণ করে থাকেন। ব্যবসায়ীর স্থাবর সম্পত্তি যেমন: বিল্ডিং ফ্যাক্টরি, অস্থাবর সম্পত্তি যেমন: কাঁচামাল, বিক্রয়যােগ্য মালামাল, ইত্যাদির বিপরীতে ব্যাংক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস থেকে বন্ধকী ঋণ গ্রহণ করেও তহবিল সরবরাহ করা যায়।

এছাড়া রহমান সাহেব ব্যবসায় যে মুনাফা অর্জন করেন, তা ব্যবসায় থেকে উত্তোলন না করে ব্যবসায়ে পুনরায় বিনিয়োেগ করেও অর্থায়নের প্রয়ােজন মেটাতে পারেন। ব্যবসায় চলাকালীন অবস্থাতেই যদি রহমান সাহেব দৈনন্দিন খরচ যেমন: মেশিন মেরামত, বাড়ি ভাড়া প্রদান, কর্মচারীদের বেতন প্রদান, বিদ্যুৎ বিল প্রদান ইত্যাদি নির্বাহের জন্য অর্থ-ঘাটতির মুখােমুখি হন, তবে তা সংস্থানের জন্য তিনি ভবিষ্যৎ বিক্রয়ের বিপরীতে অগ্রিম গ্রহণ করতে পারেন। আবার বাকিতে মালামাল ক্রয় করেও অর্থায়ন করা সম্ভব।

অনেক সময় মূল্যবান মেশিনারিজ, বড় ধরনের যন্ত্রপাতি, বিল্ডিং অথবা জমি ইত্যাদি ক্রয় না করে বরং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়াও নেয়া যায়, এতে ব্যবসায়ী এক সাথে প্রচুর অর্থ বিনিয়ােগের ঝুঁকি হতেও রক্ষা পায়। বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, যেমন: কোহিনূর কেমিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার টেক্সটাইলস, সিঙ্গার বাংলাদেশ- এ ধরনের বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলাে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ সংস্থান করে। এই ধরনের উৎস হতে সংগৃহীত অর্থ দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারযােগ্য।

এভাবে ব্যবসায়ের গঠন, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্যের ভিন্নতার কারণে নানারকম উৎস হতে প্রতিষ্ঠান তহবিল সগ্রহ করে থাকে। যেকোনাে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে তহবিলের দুটি ভিন্ন উৎস থাকে। একটি মালিকপক্ষ অন্যটি ঋণদাতা। মালিকপক্ষের প্রদত্ত তহবিলকে অভ্যন্তরীণ উৎস এবং ঋণদাতা প্রদত্ত তহবিলকে বহিস্থ উৎস বলা হয়। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই সাধারণত দুটো উৎসই ব্যবহার করে থাকে।

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button