আমাদের সকল পোস্ট ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পেতে ফলো করুন :

Click Here
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি

বাক্যের অংশ ও শ্রেণিবিভাগ | বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি নবম-দশম শ্রেণি

বাক্যের অংশ ও শ্রেণিবিভাগ

এক বা একাধিক শব্দ দিয়ে গঠিত পূর্ণ অর্থবােধক ভাষিক একককে বাক্য বলে। বাক্য দিয়ে বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয়। যেমন- “সজল ও লতা বই পড়ে।” – এটি একটি বাক্য। পাঁচটি শব্দ দিয়ে গঠিত এই বাক্যে বক্তার মনের ভাব পুরােপুরি প্রকাশিত হয়েছে। বাক্যের মধ্যে স্থান পাওয়া প্রত্যেকটি শব্দকে পদ বলে। এদিক দিয়ে পদ হলাে বাক্যের একক। রূপতত্ত্ব অংশে শব্দশ্রেণি নামে বাক্যের এই পদ বিভাজনকে উপস্থাপন করা হয়েছে। উপরের বাক্যের সজল’, ‘লতা’ ও বই হলাে বিশেষ্য, ও’ হলাে যােজক এবং ‘পড়ে হলাে ক্রিয়া। বাক্যের মধ্যে একাধিক শব্দের গুচ্ছ অনেক সময়ে পদের মতাে কাজ করে। তখন সেই একাধিক শব্দের গুচ্ছকে বর্গ বলা হয়। উপরের বাক্যে ‘সজল ও লতা’ একটি বর্গ।

আরো পড়ুন : সরল জটিল ও যৌগিক বাক্য | বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি নবম-দশম শ্রেণি

সাধারণ বাক্যের প্রধান তিনটি অংশ: কর্তা, কর্ম ও ক্রিয়া। বাক্যের ক্রিয়াকে যে চালায়, সে হলাে কর্তা। যাকে অবলম্বন করে ক্রিয়া সম্পাদিত হয় তাকে বলে কর্ম। আর বাক্যের মধ্যে যে অংশ দিয়ে কোনাে কিছু করা, ঘটা বা হওয়া বােঝায় তাকে বলে ক্রিয়া। উপরের বাক্যে ‘সজল ও লতা’ হলাে কর্তা, ‘বই’ হলাে কর্ম এবং ‘পড়ে’ হলাে ক্রিয়া। প্রতিটি বাক্যকে উদ্দেশ্য ও বিধেয় – এই দুই অংশে ভাগ করা যায়। বাক্যের যে অংশে কারাে সম্পর্কে বলা হয়, সেই অংশ হলাে বাক্যের উদ্দেশ্য। এছাড়া বাক্যের যে অংশে উদ্দেশ্য সম্পর্কে কিছু বলা হয়, সেই অংশ হলাে বাক্যের বিধেয়। উপরের বাক্যে সজল ও লতা’ উদ্দেশ্য এবং বই পড়ে বিধেয়।

গঠনগত দিক দিয়ে বাক্যকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়: সরল, জটিল ও যৌগিক।

  • সরল বাক্য: একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকলে তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন – জেসমিন সবার জন্য চা বানিয়েছে।
  • জটিল বাক্য: একটি মূল বাক্যের অধীনে এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য বা বাক্যাংশ থাকলে জটিল বাক্য তৈরি হয়। যেমন – যদি তােমার কিছু বলার থাকে, তবে এখনই বলে ফেলাে।
  • যৌগিক বাক্য: এক বা একাধিক বাক্য বা বাক্যাংশ যােজকের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে যৌগিক বক্য গঠন করে। যেমন – রহমত রাতে রুটি খায় আর রহিমা খায় ভাত।

বাক্যের বিধেয় অংশে ক্রিয়া থাকা-না থাকা বিবেচনায় বাক্যকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায় সক্রিয় বাক্য ও অক্রিয় বাক্য।

  • সক্রিয় বাক্য: যেসব বাক্যের বিধেয় অংশে ক্রিয়া থাকে, সেগুলােকে সক্রিয় বাক্য বলে। যেমন- আমার মা চাকরি করেন।
  • অক্ৰিয় বাক্য; যেসব বাক্যের বিধেয় অংশে ক্রিয়া থাকে না, সেগুলােকে অক্রিয় বাক্য বলে। যেমন – তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। 

তবে অতীত ও ভবিষ্যৎ কালের প্রয়ােগে এগুলাে সক্রিয় বাক্য হয়ে যায়। যেমন – “তিনি বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন’ বা তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হবেন।

এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন

বক্তব্যের লক্ষ্য অনুযায়ী বাক্যকে বিবৃতিবাচক, নেতিবাচক, প্রশ্নবাচক, অনুজ্ঞাবাচক ও আবেগবাচক প্রভৃতি ভাগে ভাগ করা যায়:

  • বিবৃতিবাচক বাক্য সাধারণভাবে কোনাে বিবরণ প্রকাশ পায় যেসব বাক্যে, সেগুলােকে বিবৃতিমূলক বাক্য বলে। বিবৃতিবাচক বাক্য ইতিবাচক বা নেতিবাচক হতে পারে। যেমন – আমরা রােজ বেড়াতে যেতাম। তারা তোমাদের ভােলেনি।
  • প্রশ্নবাচক বাক্য বক্তা কারও কাছ থেকে কিছু জানার জন্য যে ধরনের বাক্য বলে, সেগুলাে প্রশ্নবাচক বাক্য। যেমন – তােমার নাম কী? সুন্দরবনকে কোন ধরনের বনাঞ্চল বলা হয়?
  • অনুজ্ঞাবাচক বাক্যঃ আদেশ, নিষেধ, অনুরােধ, প্রার্থনা ইত্যাদি বােঝাতে অনুজ্ঞাবাচক বাক্য হয়। যেমন – আমাকে একটি কলম দাও। তার মঙ্গল হােক।
  • আবেগবাচক বাক্য কোনাে কিছু দেখে বা শুনে অবাক হয়ে যে ধরনের বাক্য তৈরি হয়, তাকে আবেগবাচক বাক্য বলে। যেমন – দারুণ! আমরা জিতে গিয়েছি। অত উঁচু পাহাড়ে উঠে আমি তাে ভয়েই মরি!

অনুশীলনী সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দাও।

১. এক বা একাধিক শব্দ দিয়ে গঠিত পূর্ণ অর্থবােধক ভাষিক একককে কী বলে?
ক. বাক্য
খ. বাক্যাংশ
গ. উদ্দেশ্য
ঘ. বিধেয়

২. বাক্যের মধ্যে স্থান পাওয়া প্রত্যেকটি শব্দকে কী বলা হয়?
ক. যােজক
খ. বর্গ
গ. ধ্বনি
ঘ. পদ

৩. বাক্যের মধ্যে একাধিক শব্দের গুচ্ছকে কী বলে?
ক. বর্ণ
খ. বর্গ
গ. পদ
ঘ. শব্দ

৪. বাক্যের ক্রিয়াকে যে চালায় তাকে বলে –
ক. কর্তা
খ. কর্ম
গ. ক্রিয়া
ঘ. পদ

৫. “সজল স্কুলে যায়।” – বাক্যের উদ্দেশ্য –
ক. সজল
খ. স্কুলে
গ. যায়
ঘ. স্কুলে যায়

৬, একটি মূল বাক্যের অধীনে এক বা একাধিক আশ্রিত বাক্য বা বাক্যাংশ থাকলে তাকে কোন বাক্য বলে?
ক. সরল বাক্য
খ. যৌগিক বাক্য
গ. জটিল বাক্য
ঘ. সক্রিয় বাক্য।

৭. এক বা একাধিক বাক্য বা বাক্যাংশ যােজকের মাধ্যমে মিলে যে বাক্য হয় তাকে কী বাক্য বলে?
ক. সরল বাক্য
খ. যৌগিক বাক্য
গ. জটিল বাক্য
ঘ. অক্রিয় বাক্য

৮. বাক্যের বিধেয় অংশে ক্রিয়া থাকা না থাকা বিবেচনায় বাক্যকে কতভাগে ভাগ করা যায়?
ক. দুই
খ. তিন
গ. চার
ঘ. পাঁচ

৯. কোনাে কিছু দেখে বা শুনে অবাক বা বিস্মিত হলে কোন ধরনের বাক্য তৈরি হয়?
ক. নেতিবাচক বাক্য
খ. অনুজ্ঞাবাচক বাক্য
গ. প্রশ্নবাচক বাক্য
ঘ. আবেগবাচক বাক্য

Md. Mahabub Alam

I am a committed educator, blogger and YouTuber and I am striving to achieve extraordinary success in my chosen field. After completing Masters in Anthropology from Jagannath University, I am working as Chief Accounts Officer in a national newspaper of the country. I really want your prayers and love.
Back to top button