বাংলাদেশ বিষয়াবলীসাধারণ জ্ঞান

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আপনারা যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন তাদের জন্য লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। ইনশাল্লাহ!

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী

প্রশ্ন : বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে কবে?
উত্তর : ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী কবে পালিত হবে?
উত্তর : ১৬ ডিসেম্বর ২০১১।

প্রশ্ন : ১৬ ডিসেম্বরকে জাতীয় দিবস হিসেবে কবে ঘােষণা করা হয়?
উত্তর : ২২ জানুয়ারি ১৯৭২।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের বিজয় দিবস কবে?
উত্তর : ১৬ ডিসেম্বর।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের বিজয় লাভের দিন বাংলা কত তারিখ ছিল?
উত্তর : ১ পৌষ ১৩৭৮।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের বিজয় লাভের দিন কী বার ছিল?
উত্তর : বৃহস্পতিবার।

প্রশ্ন : Victory শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?
উত্তর : ল্যাটিন Victoria শব্দ থেকে।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ড গঠিত হয় কবে?
উত্তর : ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : যৌথ বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন কে?
উত্তর : ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরােরা।

প্রশ্ন : ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে যায় কবে?
উত্তর : ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের চিফ অব স্টাফ কে ছিলেন?
উত্তর : লেফটেন্যান্ট জেনারেল জ্যাকব ফ্রেডারিক, রালফ জ্যাকব (জে এফ আর জ্যাকব)।

প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ কে ছিলেন?
উত্তর : লেফটেন্যান্ট জেনারেল গুল হাসান খান।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর : ফিল্ড মার্শাল শ্যাম মানেকশ। মূল নাম শ্যাম হােরামশিজি প্রেমজি শ্যাম বাহাদুর জামসেদজি মানেকশ।

প্রশ্ন : মিত্রবাহিনীর প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর : লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরােরা।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের দুর্ধর্ষ অপারেশন কোনটি?
উত্তর : অপারেশন ফার্মগেট।

প্রশ্ন : মুক্তিযােদ্ধা দিবস কবে?
উত্তর :১ ডিসেম্বর।

প্রশ্ন : বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস কবে?
উত্তর : ৬ ডিসেম্বর।

বাংলাদেশকে স্বীকৃতি

প্রশ্ন : বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে ১৯৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে অনুরােধ জানিয়ে কতটি পত্র প্রেরণ করা হয়?
উত্তর : চারটি পত্র ১৫ অক্টোবর; ২৩ নভেম্বর; ২ ডিসেম্বর এবং ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : ৪টি পত্রের মধ্যে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ যুগাভাবে ভারতের। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে অনুরােধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করেন কবে?
উত্তর : ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে কতটি দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে?
উত্তর : ২টি- ভুটান ও ভারত।

প্রশ্ন : বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম রাষ্ট্র কোনটি?
উত্তর : ভুটান; ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে তারবার্তার মাধ্যমে)।

প্রশ্ন : বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী দ্বিতীয় রাষ্ট্র কোনটি?
উত্তর : ভারত; ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (আনুমানিক সকাল ১১.০০-১১.৩০টার দিকে তারবার্তার মাধ্যমে)।

প্রশ্ন : ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভারতের পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব উত্থাপন করেন কে?
উত্তর : ইন্দিরা গান্ধী।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণ

প্রশ্ন : পাকিস্তানি বাহিনী কোথায় আত্মসমর্পণ করে?
উত্তর : রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সােহরাওয়ার্দী উদ্যান)।

প্রশ্ন : পাকিস্তানি বাহিনীর কত জন সদস্য আত্মসমর্পণ করে?
উত্তর : ৯৩,০০০ সদস্য। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণের ঘটনা।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের, আত্মসমর্পণ দলিল কোথায় স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর : রেসকোর্স ময়দান।

প্রশ্ন : ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণ দলিলের নাম কী ছিল?
উত্তর : Instrument of Surrender.

তােপধ্বনি

নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে ৩১ বার তােপধ্বনি দেওয়া হয়। তােপধ্বনি হচ্ছে প্রচলিত। সামরিক সম্মান। তােপধ্বনির মাধ্যমে দেশের সূর্যসন্তানদের সম্মান জানানাে হয়। ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর হওয়ায় ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ৫০ বার তােপধ্বনির মাধ্যমে উদ্যাপন করা হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বারের পরিবর্তে ৫০ বার তােপধ্বনি (কামান দাগা) করা হবে।

প্রশ্ন : আত্মসমর্পণের দলিল কতটি প্রস্থে প্রস্তুত করা হয়?
উত্তর : ৩টি একটি ভারত সরকার, দ্বিতীয়টি পাকিস্তান সরকার এবং তৃতীয়টি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

প্রশ্ন : আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন কে কে?
উত্তর : পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি (এ.এ. কে, নিয়াজি) ও যৌথবাহিনীর পক্ষে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল জগজিৎ সিং অরােরা।

প্রশ্ন : আত্মসমর্পণের জন্য এ. এ. কে, নিয়াজিকে পাকিস্তানে কী বলা হয়?
উত্তর : বাংলার শৃগাল।

প্রশ্ন : আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে কে নেতৃত্ব প্রদান করেন?
উত্তর :গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার।

প্রশ্ন : আত্মসমর্পণের পরে পাকিস্তানিদের যুদ্ধবন্দি (Prisoner of War) হিসেবে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়?
উত্তর : ঢাকা সেনানিবাসে।

প্রশ্ন : মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর নেতৃত্বে কবে কোথায় পাকিস্তানি বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করে?
উত্তর : ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭১; ঢাকা সেনানিবাসের গলফ মাঠে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যা

প্রশ্ন : পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের সহযােগীরা পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে কবে?
উত্তর : ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে?
উত্তর : ১৪ ডিসেম্বর।

প্রশ্ন : ১৪ ডিসেম্বরকে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ ঘােষণা করেন কে?
উত্তর : বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ।

প্রশ্ন : পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে শহীদ দার্শনিকের নাম কী?
উত্তর : গােবিন্দ চন্দ্র দেব (তিনি জি সি দেব নামেই সমধিক পরিচিত)।

প্রশ্ন : দেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী কে?
উত্তর : ড. সৈয়দ মুহম্মদ শামসুজ্জোহা।

প্রশ্ন : বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দিন কী বার ছিল?
উণ। মঙ্গলবার।

বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দিন বাংলা শত তারিখ ছিল?
উওণ। ২৯ অগ্রহায়ণ ১৩৭৮।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী কারা

২৫ মার্চ ১৯৭১ থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত সময়ে যেসব বাঙালি সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এর ফলে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী কিংবা তাদের সহযােগীদের হাতে শহীদ কিংবা ওই সময়ে চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন তারাই হন শহীদ বুদ্ধিজীবী।

বুদ্ধিজীবী বাছাই কমিটি

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নের জন্য গবেষক, বীর মুক্তিযােদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে ১৯ নভেম্বর ২০২০ যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয় । ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ অনুষ্ঠিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নে গঠিত কমিটির প্রথম সভা। এতে প্রাথমিকভাবে ১,২২২ জন বুদ্ধিজীবীর তালিকা অনুমােদন দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : শত্রুমুক্ত জেলাসমূহ

প্রশ্ন : স্বাধীনতাকালীন বাংলাদেশের কতটি জেলা ছিল ও কী কী?
উত্তর : ১৯টি– বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নােয়াখালী, রাঙামাটি, ঢাকা, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, যশাের, খুলনা, কুষ্টিয়া, বগুড়া, পাবনা, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও সিলেট।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন কোনটি?
উত্তর : মিরপুর, ঢাকা।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ঢাকার মিরপুরকে হানাদার মুক্ত করতে অভিযান চালায় কবে?
উত্তর : ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন মিরপুর কবে মুক্ত হয়?
উত্তর : ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ (বিজয়ের ৪৬ দিন পর)।

প্রশ্ন : স্বাধীনতাকালীন ১৯টি জেলার মধ্য কোন জেলা প্রথম শত্রুমুক্ত হয়?
উত্তর : যশাের; ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১।

প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের সময় কতটি মহকুমা ছিল?
উত্তর : ৪৯টি।

তারিখ অনুযায়ী শত্রুমুক্ত বর্তমান জেলাসমূহ (ঢাকা জেলা ব্যতীত)

২৯ নভেম্বর পঞ্চগড়
৩ ডিসেম্বর বরগুনা ও ঠাকুরগাঁও
৪ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর ।
৬ ডিসেম্বর যশাের, ঝিনাইদহ, ফেনী, মেহেরপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ
৭ ডিসেম্বর নােয়াখালী, গােপালগঞ্জ, শেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, সাতক্ষীরা ও গাইবান্ধা
৮ ডিসেম্বর বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরােজপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া
৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা
১০ ডিসেম্বর ভােলা, জামালপুর, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ ও নড়াইল।
১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া ও মুন্সিগঞ্জ
১২ ডিসেম্বর নরসিংদী ও কক্সবাজার।
১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নীলফামারী
১৪ ডিসেম্বর বান্দরবান, জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জ
১৫ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, সিলেট ও গাজীপুর
১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ
১৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর, কিশােরগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, রাঙামাটি, রংপুর ও চট্টগ্রাম
১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, পাবনা, নওগাঁ ও রাজশাহী।
২১ ডিসেম্বর নাটোর

Bcs Preparation

BCS Preparation provides you with course materials and study guides for JSC, SSC, HSC, NTRCA, BCS, Primary Job, Bank and many other educational exams.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button