
গতিই জীবন স্থিতিতে মৃত্যু
সৃষ্টিশীল যা কিছু দৃশ্যমান, তার সবকিছুই প্রবহমান। চলমানতাই জীবনের বৈশিষ্ট্য, নিশ্চলতা মৃত্যুর প্রতীক। স্থবিরতা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনকে যেমন স্তিমিত করে দেয়, জাতীয় জীবনকেও করে বিপর্যস্ত। ঐশ্বর্যমণ্ডিত ও সমৃদ্ধ জাতীয় জীবনে তাই গতিশীলতার কোনাে বিকল্প নেই। নদী সতত প্রবহমান থাকলে তার বুকে কোনােরূপ শৈবাল বা আবর্জনা জমতে পারে না। কিন্তু তার গতি যদি স্থির হয়ে যায়, তার বুকে শৈবাল বা আবর্জনায় ভরে ওঠে। দ্রুপ, ব্যক্তিগত তথা সামাজিক জীবনে কোনাে ব্যক্তি যদি অলস বা স্থবির হয় তবে তার জীবনে উন্নতির আশা অবাস্তব কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। জীবনে উন্নতির চাবিকাঠি হলাে সংস্কারমুক্ত হয়ে গতিময়-জীবনের দিকে অগ্রসর হওয়া। যে জাতি যতদিন উন্নয়নকামী ও কর্মঠ থাকে, ততােদিন কোনােরূপ কুসংস্কার তার গতিরােধ করতে পারে না। কিন্তু কোনাে জাতি যদি তার পুরাতন ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করে অগ্রগতির পথে না এগােয় তবে স্রোতহীন নদীর মতােই শত সংস্কার এসে তাকে ঘিরে ফেলে। ফলে ধীরে ধীরে সে এ ধরা থেকে লয়প্রাপ্ত হয়। যে জাতির জীবনধারা অচল, অসার সে জাতির অপমৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। গতিশীল জীবনপ্রবাহই জাতীয় জীবনকে করে জীবন্ত ও উজ্জ্বল।
এই বিভাগের আরো ভাবসম্প্রসারণ :
- কীর্তিমানের মৃত্যু নাই
- পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথ সৃষ্টি করে
- অর্থসম্পত্তির বিনাশ আছে কিন্তু জ্ঞানসম্পদ কখনাে বিনষ্ট হয় না
- অসি অপেক্ষা মসী অধিকতর শক্তিমান
- অনুকরণের দ্বারা পরের ভাব আপন হয় না অর্জন না করলে কোন বস্তুই নিজের হয় না
- অর্থই অনর্থের মূল
- অধর্মের ফল হইতে নিষ্কৃতি নাই
- মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়