জীবনযাপনস্বাস্থ্য টিপস

কুকুরে কামড়ালে করণীয়

পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে কুকুর নেই। কুকুর সাধারণত উপকারী মানুষের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হলেও কুকুরের কামড়ে মানুষের জীবন চলে যাওয়া বা স্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে সারা জীবন কষ্ট ভােগ করা খুবই পরিচিত একটা সমস্যা। কুকুরের কামড়ের উপযুক্ত চিকিৎসা থাকলেও কিছু প্রাথমিক করণীয় না থাকার কারণে অনেকের জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ।

কুকুরে কামড়ালে জরুরি ভিত্তিতে করণীয়ঃ

  • আক্রান্ত ব্যক্তির ভীতি দূর করতে হবে।
  • কুকুর যাতে পর পর অনেককে কামড়াতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • ভাল করে ক্ষতস্থান সাবান ও প্রচুর পানি দিয়ে ধুতে হবে এবং শুকানাের পর শুকনা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যেন ইনফেকসন না হয়।
  • কোন ভাঙ্গা দাঁত বা অন্য কোন অংশ ভিতরে আছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
  • নিরাপদ থেকে যদি সম্ভব হয়, তবে পরে বর্ণনা করা যায় এমন ভাবে কুকুরটিকে দেখতে হবে এবং সম্ভব হলে পরবর্তী ১০-১৫ দিন ঐ কুকুরের গতিবিধি লক্ষ্য রাখতে হবে। দেখতে হবে ঐ কুকুরের অসুস্থতা আছে কি না।
  • কুকুরের প্রতি লক্ষ্য রাখা সম্ভব হলে, যদি দেখা যায় কুকুরটি অসুস্থ তাহলে অনেকটা নিশ্চিত যে যাকে কামড়িয়েছে তার শরীরেও জীবাণু প্রবেশ করেছে। যদি দেখা যায় কুকুরটি সুস্থ তাহলে যাকে কামড়িয়েছে তার শরীরে জীবাণু প্রবেশের সম্ভাবনা খুবই কম। মনে রাখা দরকার যে কুকুর এই জীবাণুর ক্যারিয়র নয়, কুকুরের শরীরে এই জীবাণু থাকা মানে কুকুরটি নিজেও আক্রান্ত এবং সেও মারা যাবে।

কুকুরে কামড়ালে যে বিষয়গুলির ব্যাপারে সাবধান থাকা জরুরিঃ

  • কখনােই ক্ষতস্থান কাটবে না বা শুষবে না, এতে ইনফেকসন হতে পারে।
  • কখনােই ক্ষতস্থানে বরফ লাগাবে না, এতে ফ্রস্ট বাইট হতে পারে।
  • কখনােই ক্ষতস্থানে ইলেক্ট্রিক সক দেবে না।
  • কখনােই ক্ষতস্থানে তাগা বা ডােরা (টরনিকুয়েট) বাঁধবে না, যেটি সাপে কামড়ালে বাঁধতে হয়।

স্বাস্থ্য টিপস থেকে আরো পড়ুন

বিশেষ জ্ঞাতব্যঃ

  • কুকুর বিড়াল বা যে কোন গৃহপালিত পশুর দেহেই জলাতঙ্ক বা র‌্যাবিসের জীবাণু থাকতে পারে। তবে এ প্রাণিগুলির কোনটিই জীবাণুটির ক্যারিয়ার নয় অর্থাৎ এরা লক্ষণ বা উপসর্গবিহীন তাদের শরীরে জীবাণুটি বহন করতে পারে না। এদের শরীরে জীবাণুটি ঢুকলে প্রাণিগুলিও আক্রান্ত হয় এবং মারা যায়।
  • র‌্যাবিস একটি ভাইরাস। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে র‌্যাবিস বা বাংলায় জলাতঙ্ক বলে।
  • এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে কোন কিছু গিলতে গেলে গলার মাংশপেশীগুলি সাংঘাতিকভাবে কন্ট্রাক্ট করে বা সঙ্কুচিত হয়ে অসহ্য ব্যথা হয়। পানি গিলতে গেলেও ঘটনাটি ঘটে বলে পানি দেখলে রােগী খুব ভয় পায়। একারণেই রােগটিকে জলাতঙ্ক বলে। জল দেখে আতঙ্ক বলেই জলাতঙ্ক।
  • প্রচলিত মিথ অনুযায়ি পাগলা কুকুরে কামড়ালে রােগীর পেটে কুকুরের বাচ্চা হতে পারে, এটি একেবারেই ঠিক নয়।
  • প্রচন্ড অসুস্থতার কারণে রােগী তার স্বাভাবিক বুদ্ধিজ্ঞান প্রয়ােগ করতে ব্যর্থ হয় বলে নানান অস্বাভাবিক আচরণ করে। কুকুর যেমন পাগল হয়ে যায় মানুষের ক্ষেত্রেও তেমন হতে পারে।
  • র‌্যাবিস প্রতিরােধযােগ্য রােগ তবে প্রতিশেধকযােগ্য নয়। অর্থাৎ রােগটির লক্ষণ দেখার পূর্বেই টিকা নিলে আর রােগটি হয় না, তবে একবার হয়ে গেলে আর তা সারানাে সম্ভব নয়, নিশ্চিত মৃত্যু।
  • কুকুরে, বিড়ালে কামড়ালে যদি তাদের শরীরে র‌্যবিস জীবাণু থাকে তবে তাদের শরীরেও রােগের লক্ষণ দেখা যাবে। এবং কামড়ানাে প্রাণিটি মারা যাবে। যদি দেখা যায় যে প্রাণিটি সুস্থ্য আছে তবে ধরে নিতে হবে নিজের শরীরেও জীবাণুটি ঢােকেনি। তবে সন্দেহ না রেখে টিকা নিতে কোন অসুবিধা নেই।
  • কুকুরে, বিড়ালে কামড়ালে যদি তাদের শরীরে রবিসের জীবাণু না-ও থাকে তবে টিকা নিতে কোন অসুবিধা নাই বরং নেওয়াই শ্রেয়।
  • দেশে র‌্যাবিসের ঠিকা পর‌্যাপ্ত পরিমান মজুদ আছে। যে কোন অসুবিধায় ঢাকার মহাখালিস্থ ইনফেকসাচ ডিজিজ হাসপাতালে যােগাযােগ করতে হবে। এটি একটি সাততলা হাসপাতাল বলে ঐ এলাকার নামও সাততলা।
  • র‌্যাবিসের জীবাণু শরীরে ঢুকলেও চিন্তার কোন কারণ নেই। জীবানুটি শরীরে ঢােকার পরে ১৪ দিন পর্যন্ত নিস্ক্রিয় থাকে। ফলে ১৪ দিনের মধ্যে টিকা শুরু করতে পারলেই হয়। ৫টি টিকা নিলে রােগটি হবার কোন নম্ভাবনা থাকে না।
  • দেশের উপজেলা হাসপাতালগুলিতে র‌্যাবিসের টিকা পাওয়া যায়। এজন্যে বেসরকারী হাসপাতালে না যাওয়াই শ্রেয়। টিকার জন্য অবশ্যই সরকারী হাসপাতালে যাবেন।

Bcs Preparation

BCS Preparation provides you with course materials and study guides for JSC, SSC, HSC, NTRCA, BCS, Primary Job, Bank and many other educational exams.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button